রাজীব ঘোষ: বাংলার শিল্প মানচিত্রে কিছুটা হলেও খুশির খবর। টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা রাজ্যে পুঁজি ঢালতে চলেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করে বিভিন্ন রাজ্য এবং দেশের শিল্পপতিদের বাংলায় শিল্প গড়ার জন্য আবেদন করা হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে সেরকমভাবে বাংলায় শিল্পের প্রবেশ ঘটেনি। আর তার ফলে কর্মসংস্থানের অভাব (Unemployment) দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তাই এর মধ্যে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা টাটা হিতাচির(Tata Hitachi) বিনিয়োগের ঘোষণায় রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে খুশির খবর বলা যেতে পারে। খড়্গপুরের(Khargarpur) কারখানা সম্প্রসারণ করার জন্য ১০০ কোটি টাকার বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করতে চলেছে তারা। টাটা হিতাচির এমডি সন্দীপ সিং বলেন, এই বছর খড়গপুর আর কর্ণাটকের কারখানায় তারা ২০০ কোটি টাকা ঢালবেন। এর অর্ধেকের থেকেও কিছুটা বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করা হবে খড়্গপুরের কারখানায়।
ইতিমধ্যেই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিস (Infosys) বুধবার থেকেই রাজারহাটের ক্যাম্পাসে তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আর তার দুদিনের মধ্যেই টাটা হিতাচির তরফে আরেকটি লগ্নির খবর এলো। খড়গপুরের টাটা হিতাচির কারখানাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবথেকে বড় খননযন্ত্র উৎপাদনের কারখানা। ১১০০ কোটি টাকা খরচ করে ২০০৯ সালে সেটি তৈরি হয়েছিল। এখন নতুন লগ্নি করা হচ্ছে ওই কারখানার সম্প্রসারণ করার জন্যই।সন্দীপ সিংহ বলেন, খড়গপুরের কারখানা চালাতে গিয়ে সমস্যা হয়নি। এতে টাটা মোটরসের ৪০ শতাংশ এবং হিতাচি কনস্ট্রাকশন মেশিনারির ৬০% অংশীদারি রয়েছে।
টাটা হিতাচির এই ঘোষণায় কর্মী এবং শ্রমিকরা যথেষ্ট আনন্দিত। কারখানার এক ঠিকাশ্রমিক বলেন, এই সংস্থার বেতন কাঠামো যথেষ্ট ভালো। প্যাটন গোষ্ঠীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় বুধিয়া জানান, টাটা গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এটা রাজ্য সরকারের শিল্প স্থাপন নিয়ে আন্তরিকতার প্রমাণ। এই প্রসঙ্গে বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের সভাপতি নমিত বাজোরিয়া বলেন, দেশের শিল্প মানচিত্রে টাটা হিতাচির পুনরায় বিনিয়োগ করার ঘোষণায় বাংলার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
আরও পড়ুনঃ রেলওয়ে সিস্টেমে আমূল বদল,লেট মার্কের বদনাম ঘুচিয়ে ঝড়ের গতিতে ট্র্যাক চেঞ্জ করবে ট্রেন
তবে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা টাটা হিতাচি খড়্গপুরের কারখানায় লগ্নির ঘোষণা করলেও অর্থনীতিবিদ এবং শিল্প বিশেষজ্ঞ সুপর্ণ মৈত্র কিন্তু খুব একটা আশার আলো দেখছেন না। তার কারণ, যে কোনো বিনিয়োগ বা লগ্নির ক্ষেত্রেই নতুন কর্মসংস্থান তৈরীর একটা সম্ভাবনা দেখা স্বাভাবিক। কিন্তু সুপর্ণ মৈত্রের কথায়, গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের ভাবমূর্তির এই ধারাবাহিক যে অবনমন চলছে, তার মধ্যে এই ঘোষণা কিছুটা হলেও রূপোলি রেখা। কিন্তু বাড়তি কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা সম্বন্ধে সুপর্ণ মৈত্র যথেষ্ট সন্দিহান। যদিও কারখানার এক স্থায়ী কর্মীর কথায়, লগ্নি বাড়লে কারখানায় কাজের সুযোগ তৈরি হতে পারে।