R G Kar: আর জি কর(R G Kar) হাসপাতালের জুনিয়র মহিলা ডাক্তার অভয়াকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। 9 অগস্ট সকালে সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর নিথর দেহ। ময়না তদন্ত করে তরুণীর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। সূত্রের খবর, ঘুমন্ত অবস্থাতেই ধর্ষণ করে গলা টিপে খুন করার সম্ভাবনাই প্রবল। এককথায়, আর জি কর(R G Kar) কাণ্ডে অমানবিকতার ভয়ঙ্কর নজির। শহরের মেয়েদের কি হবে, চিন্তায় টলিউডও(Tollywood)। সামাজিক বর্বরতা দেখে মুখ বুজে থাকলেন না কেউই। নেটিজেনদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ঝলসে দিলেন সৃজিত, স্বস্তিকা অনিন্দিতারা।
পরিচালক অনিন্দিতা বলেছেন, একটা শরীরকে ভোগ করে মেরে ফেলার এই যে পৈশাচিক আনন্দ, এটা শেষ হতে হবে। শাস্তি হওয়া দরকার এমন অমানুষের। তাঁর কথায় একমত সাড়া সোশ্যাল মিডিয়া। নেটিজেনদের কথায়, মুখ বুঝে থাকা নয়। চুপ করে থেকে মেয়ের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয়, কঠিন শাস্তি চাই হত্যাকারীর।
বাংলার জনপ্রিয় পরিচালক অনিন্দিতা সদ্য হার্টের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁকে বাঁচিয়ে জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার পিছনে হাত ছিল এই চিকিৎসকদেরই। আর তাঁদের দিকে এমন কুনজরে তাকানোর মনোভাব আসে কীভাবে। তাঁদের ভরসা ভাঙা যায় কীভাবে। এমনটাই মনে করিয়ে দিয়ে মহিলা পরিচালক আরও বলেছেন, চিকিৎসকেরা যদি আপনাদের অসময়ের ভরসা হন, আপনারাও চিকিৎসকদের অসময়ের ভরসা।
ভরসা আর রইল কই। শহরের মেয়েরা তো বিপদের কুয়ায় আছাড় খাচ্ছে। চিন্তায় রাত দিন এক হয়ে যাচ্ছে অভিনেতা কিঞ্জল নন্দের। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এমন অস্বাভাবিক ঘটনা দেখে বিষন্ন হয়ে পড়েছেন তিনি। কারণ, এই ঘটনার রাতে কিঞ্জলও নাকি উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে। এমন ঘটনা ঘটবে বলে ভাবতেও পারেননি তিনি। অভিনেতার আকুল শব্দে, আমার মেয়েও তো বড় হবে। ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মেয়েরা তো নিরাপদ নন-ই। এই ঘটনার পরে মনে হচ্ছে কেউই আর শহরে নিরাপদে নেই।
চুপ করে থাকেননি সৃজিত মুখোপাধ্যায়। করুণ আর্তি নিয়ে লিখেছেন কবিতা। ছন্দ মিলিয়ে বলেছেন, ‘আমার শহর কুণ্ঠিত বড়, ক্ষমা করো তুমি মেয়ে; পুরুষ বলেই গাইছি এ গান, শুধু মার্জনা চেয়ে।’ বরাবরই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আসা, অমানবিকতাকে ঘৃণার ডোরে বেঁধে ফেলা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ও লিখেছেন, ‘ভাষা নেই নিন্দের। এই দোষীদের অন্তত সাজা হোক। এ বার আর মেয়েটার দোষ, সে ভুল ভাবে, ভুল সময়ে, ভুল জায়গায় ছিল বলে তার দিকে আঙুল তুলব না।’
লড়াই লড়তে এসে হার মেনে নিলে সে লড়াই তো আর লড়াই হতে পারে না। জনসমক্ষে এমনটাই বোঝাতে গিয়ে অভিনেত্রী রূপাঞ্জনার দাবি, আমরা আগেই হার মেনে নিই বলেই আমাদের লড়াই ছোট করে দেখা হয়! এখনই হার মানার সময় এসে গিয়েছে কি? বিচার চাই! মানে, এ বার বিচার চাই। অপরাধীদের কঠিন শাস্তি চাই, যা নজির হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ মেদিনীপুর মেডিক্যালে ডাক্তারদের কর্মবিরতি, ফাঁসি চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে, ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিদ্ধার্থ রায়ও পেশায় একজন ডাক্তার। 9 অগস্ট ঘটে যাওয়া তরুণী ডাক্তারের অস্বাভাবিক মৃত্যুও দোলা দিয়েছে তাঁর মনে। রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করে এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আরজি করের ফেস্টে বহুবার গিয়েছি। এখনও আমরা সিনিয়র ব্যান্ড হিসেবে ওখানকে পারফর্ম করি। ওখানকার পরিবেশ নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি। আর সেখানেই কিনা এমন একটা ঘটনা ঘটল। চিকিৎসকের দেহ মিলল তাঁরই হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে! এটা তো ভাবনার বাইরে। নিরাপত্তা কোথায়?’।