রাজীব ঘোষ: দুর্গাপুজোর(Durga Puja) কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। হাতে আর মাত্র ৭৮ দিন বাকি। ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী। তার আগে প্রত্যেক বছরের মতো এবারও সমস্ত ক্লাবগুলিকে নিয়ে পুজোর প্রস্তুতি বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে ঘিরে ইতিমধ্যেই কলকাতার সমস্ত বড় বড় ক্লাবগুলো(Club)পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আর তার আগে প্রাকপুজো বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো অনুদান(Donation) বাড়াবেন কিনা তাই নিয়ে প্রত্যেকেই আগ্রহী ছিলেন।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এবার গতবারের তুলনায় আরো ১৫ হাজার টাকা অনুদান বাড়িয়ে দিলেন। রাজ্য সরকারের তরফে এই বছর রাজ্যের ক্লাবগুলি দুর্গাপুজো আয়োজন করার জন্য ৮৫ হাজার টাকা করে অনুদান পাবে। আগের বছর রাজ্য সরকার ক্লাবগুলিকে দুর্গাপুজোর অনুদান বাবদ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিল। এবার ১৫ হাজার টাকা বাড়ানো হলো। ফলে পুজো আয়োজকদের মধ্যে খুশির হাওয়া। তবে শুধুই যে আর্থিক অনুদান তা নয়, গত বছর পূজো কমিটিগুলোকে দমকল, বিদ্যুৎ মাসুল সহ বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এই বছরও সেগুলো বজায় থাকছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ মাসুলে ছাড়ের পরিমাণ আরো কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ এবার পুজোয় সব চমক ছাপিয়ে যাবে, সন্তোষ মিত্রে হচ্ছে বড় কিছু
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, বাংলার দুর্গোৎসব কেবল একটা পুজো নয়। ইউনেস্কো একে দ্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ এর মর্যাদা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, পূজোর সময় বাংলায় ছোট বড় মাঝারি শিল্পে অন্ততপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের সংসার চলে এই ব্যবসার মাধ্যমে। তাই এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব সরকারের রয়েছে। এছাড়াও পুজো কমিটিগুলি সারা বছর ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কাজের মধ্যে যুক্ত থাকে।
প্রথমবার ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর দুর্গাপুজোর অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে তিনি ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। তারপর ধাপে ধাপে দুর্গাপুজোর আয়োজন করার জন্য ক্লাবগুলিকে টাকা বাড়ানো হয়। সেই অনুদান বাড়িয়ে গত বছরে ক্লাবগুলি পেয়েছিল ৭০ হাজার টাকা করে। আর এ বছর আরো বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ হাজার টাকা বেড়ে হল ৮৫ হাজার টাকা।
তবে এই কথা ঠিক, একটি সাধারণ মানের ক্লাব দুর্গাপুজোর আয়োজন করার সময় হাতে নগদ ৮৫ হাজার টাকা পেলে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই জানেন, যথেষ্ট আর্থিক সুরাহা হয়ে যায় তাদের। এর আগে বিভিন্ন সময়ে চাঁদার জুলুম দেখা যেত। কিন্তু রাজ্য সরকার অনুদান ঘোষণা করার পর থেকে সেই চাঁদার জুলুম অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। দুর্গাপূজার সঙ্গে বাংলা এবং বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। তাই রাজ্য সরকারের তরফে অনুদান একেবারে বন্ধ করে দিলে হয়তো অনেক পুজো কমিটি পুজো করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন। অনেক পুজোতেই এই রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকায় থিমের প্রতিমা, মণ্ডপ তৈরি হয়। দুর্গাপুজোকে ঘিরে ইউনেস্কো সেরার শিরোপাও পেয়েছে। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছে পুজো আয়োজক ক্লাবগুলিতে।