Maoist: বন্দুক – গুলির লড়াই, স্বপ্ন দেখেছিলেন দিন বদলের অবশেষে ইতিহাস সৃষ্টি মাওবাদী নেতার

Published On:
লেটেস্ট আপডেট সবার আগে Join Now

সত্তরের দশকে একদল দামাল ছেলে – মেয়ে স্বপ্ন দেখেছিল দেশটাকে বদলে দেওয়ার। তারা চেয়েছিল সত্তরের দশককে মুক্তির দশকে পরিণত করতে। তারা পারেনি, সেই স্বপ্ন অচিরেই হারিয়ে গিয়েছিল গহীন অন্ধকারে। শাসকের বুটের তলায় নিষ্পেষিত হয়েছিল দিন বদলাবার স্বপ্ন। বন্দুক আর গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে ঝরে গিয়েছিল হাজার হাজার প্রাণ, হাজার হাজার প্রতিভা। তবে এবার উলটপুরান। একসময় যে ছেলেটা বন্দুক কাঁধে দিন বদলের স্বপ্ন ফেরি করে বেড়াত, স্বপ্ন দেখত বুর্জোয়াদের শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হবে শ্রমিক – কৃষকের সরকার সেই এবার ইতিহাস সৃষ্টি করল। কথা হচ্ছে জেলবন্দি মাওবাদী(Maoist) নেতা অর্ণব দামের। ইতিহাসে পিএইডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন জানিয়েছিল সে। গতকাল পি এইচ ডি ইন্টারভিউয়ের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে ২৫০ জনের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে মাওবাদী নেতা অর্ণব।

আরও পড়ুনঃ জঙ্গলমহলের স্বশাসনের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা করল ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ তনভীর এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ শুধু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নয়। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই বিষয়টি মডেল হওয়া উচিত।’ ওর ইচ্ছাপূরণের সরকার যেভাবে সহযোগিতা করেছে সেটাও উল্লেখযোগ্য।

পশ্চিম মেদিনীপুরে শিলদায় হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল অর্ণব। তাকে ইন্টারভিউ দিতে নিতে যাওয়া হয়েছিল কড়া পুলিশ পাহারায়। ইন্টারভিউয়ের পর দেখা গেল সবাইকে টেক্কা দিয়ে প্রথম স্থান ছিনিয়ে নিয়েছে অর্ণব। এই মাওবাদী নেতা ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন।

তবে পড়াশোনার জন্যও অর্ণবকে কম লড়াই করতে হয়নি। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা শেষে পিএইচডি করার আবেদন জানান জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। যদিও সেই আবেদনে কর্ণপাত করেনি তারা। শেষপর্যন্ত অনশনের হুশিয়ারি দেন অর্ণব। সেইসময় এপিডিআর নামে একটি সংগঠন অর্ণবকে সহযোগিতা করে।

আজও লড়াইয়ের কথা ভোলেননি অর্ণব। সম্প্রতি তিনি জেলে ফের আন্দোলন শুরু করেছেন। তিনি জানিয়েছেন জেলে তাদের যে কাজ দেওয়া হয় তার প্রথম তিন মাসের মজুরি দিতে অস্বীকার করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। সেই নিয়ে আন্দোলন দানা বেঁধেছে। সঙ্গে অর্ণবদের দাবি জেলে চাই চব্বিশ ঘণ্টার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা। অর্ণবরা আছেন, তারা আছেন বলেই এখনও বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা যায়। জেলের কালো কুঠুরির মধ্যে বসেও গেয়ে ওঠা যায় ‘ … আমি আঁধারের আল বেয়ে আনতে চলেছি লাল টুকটুকে দিন।’