বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষের বাম রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা সময় তিনি ছিলেন অন্যতম মুখ, ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘদিন হল শারীরিক অসুস্থতার কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসেছেন তিনি। অথচ আজও পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ক্ষেত্রে সমান প্রাসঙ্গিক তিনি। বিরোধী দলের নেতা – নেত্রীরা যখন সবাই একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত তখন তার প্রসঙ্গ উঠলেই যেন শ্রদ্ধায় নত হয়ে যায় সকলের মাথা। তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিঙ্গুর – নন্দীগ্রামের মতো তার অনেক সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক নেতা – নেত্রী থেকে সাধারণ জনগণের সামনে বুদ্ধবাবু আজও ‘ অনেস্ট পলিটিশিয়ান।’ অথচ সেই বুদ্ধবাবুই এবার ভোট দিচ্ছেন না। কিন্ত তার এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?
কিছুদিন আগেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও ছিল আরও বেশকিছু শারীরিক সমস্যা। বেশ কয়েকদিন চিকিৎসকদের তত্বাবধানে থাকার পরে বাড়ি ফেরেন তিনি। জানা গেছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই সম্ভবত ভোট দিতে পারবেন না বুদ্ধবাবু।
সালটা ২০১১। যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরাজিত হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এরপর গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। রাজনীতি থেকে ক্রমেই নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। বাড়িতেই সময় কাটতো বই পড়ে বা লেখালেখি নিয়ে। ২০১৯ সালে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে গেলেও অসুস্থতার কারণেই মঞ্চে উঠতে পারেননি তিনি। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেননি বুদ্ধবাবু। এবার সম্ভবত সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।
বুদ্ধবাবুর বয়স ৮০। ফলে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ সুবিধাও পাবেন না তিনি। নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ী ৮৫ বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিরা বাড়িতে থেকেও ভোট দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের আগে থেকে আবেদন করতে হবে।
এবার লোকসভা ভোটে ভালো ফলের আশা করছে বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কিছুদিন আগেই একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন – ‘ মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দেয় তাহলে গোটা দেশের এক তৃতীয়াংশ আসনে বামপন্থীরা জয়ী হবে।’ বামেদের শুন্য থেকে ফিরে আসার লড়াইয়ে নিজেকে সামিল করবেন বুদ্ধবাবু? সেটাই এখন দেখার।