আরজিকর কাণ্ডের(RG Kar Case) পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশ জুড়ে নারী নির্যাতন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি দিয়ে কড়া আইন প্রণয়ন করার দাবি জানিয়েছিলেন। পাল্টা জবাবে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী নারী এবং নাবালিকা সুরক্ষা নিয়ে রাজ্যের ব্যর্থতা তুলে ধরে পরিসংখ্যান বিস্তারিতভাবে জানান। এবার তার জবাবেই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) সারাদেশে ১৫ দিনে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হেডলাইন তুলে ধরে ছবিটি তুলে ধরার চেষ্টা করলেন।
নবান্ন অভিযানের দিন সকালেই নারী নির্যাতন নিয়ে সারাদেশের একটি সার্বিক ছবি তুলে ধরেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। একই সঙ্গে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র(Mahua Moitra) এক্স হ্যান্ডেলে আর জি করে গণধর্ষণ ঘটেনি বলে সাফাই দিয়ে সরব হয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন,” যখন দেশ ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে লড়াই চালাচ্ছে। তখনই সংবাদে প্রকাশিত কোলাজটি নজরকাড়া স্মারক হতে পারে। গত ১৫ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কি ঘটেছে তার একটি চালচিত্র এটি”।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অভিষেকের দাবি, ‘এর উত্তর অত্যন্ত স্পষ্ট। এর জন্য ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন আনা প্রয়োজন। ৫০ দিনের মধ্যে যাতে বিচার ও সাজা ঘোষণা হতে পারে। যেটা হবে দ্রুত এবং অত্যন্ত কঠিন সাজা। মানতে কষ্টদায়ক হলেও সত্যি, দেশে ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার মাত্র ২৬ শতাংশ। এর অর্থ ১০০ টি ধর্ষণের ঘটনায় মাত্র ২৬ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হয়। বাকি ৭৪ শতাংশ আসামি বিনা শাস্তিতে নিস্তার পেয়ে যায়’। অভিষেক আরো লিখেছেন, ‘যদি আমরা নির্যাতিতার প্রতি সুবিচার দিতে চাই, তাহলে আমাদের দাবি, ধর্ষণ বিরোধী একটি আইন প্রণয়ন করতে হবে। যা নির্দিষ্ট সময়ের গণ্ডির মধ্যে সম্পন্ন হবে।’
তৃণমূল এমপি মহুয়া মৈত্র আরজিকর হাসপাতালে ডাক্তার ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় আমরা- ওরা বাঁছবিচার করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন। মহুয়া এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “এটা গণধর্ষণের ঘটনা নয়। কোনো হাড় ভাঙেনি। তাড়াহুড়ো করে শেষকৃত্য হয়নি। ভিডিওসহ ময়না তদন্ত হয়েছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে খুনি গ্রেফতার হয়েছে। সিবিআই ঘটনার তদন্ত করছে। ৩১ বছরের ওই ডাক্তার মেয়েটিকে জন্তুর মতো ধর্ষণের ঘটনায় আমরা সকলেই ক্ষোভের আগুনে জ্বলছি। এই সময়টা আমরা- ওরা করার সময় নয়। প্রত্যেকেই দ্রুত বিচার এবং শাস্তি চাই। আর সেটাই হতে দিন’।
অভিষেক তার এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে আরো জানান, ‘রাজ্যগুলিকে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে এই আইন প্রণয়ন করতে হবে। বাকি সবকিছুই নিরর্থক, প্রতীকী এবং অকার্যকর।’ তার লেখার নিচে আরজিকর কাণ্ডের পরে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি থেকে পুলিশের গণধর্ষণের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করা, মহারাষ্ট্রের শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষকের গ্রেপ্তারি, ওড়িশায় দুই রোগীণীকে ধর্ষণের মত এরকম ২৪টি ঘটনার খবর তুলে ধরেছেন। সাম্প্রতিক রাজ্যের আবহে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) এই পোস্ট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।