আরজিকর কান্ড(RG Kar Case) নিয়ে যখন সারা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ চরমে, তখন এমন একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে যা দেখলে সভ্য সমাজের গা শিউরে উঠতে পারে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) শিশু কন্যাকে কেউ ধর্ষণ করলে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে, আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচির এরকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। (যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি জি এন ই বাংলা)। আর এই হুমকি দেওয়ার অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা থেকে পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।
ভিডিওতে অভিষেকের(Abhishek Banerjee) শিশু কন্যার উদ্দেশ্যে ওই ধরনের মন্তব্য শোনার পরেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘ওই সংশ্লিষ্ট ভিডিওতে নাবালিকাকে ধর্ষণ করলে ১০ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে একজনকে।’ ভিডিওটি সামনে আসার পরে ওই মন্তব্যের অভিযোগে মিনাখার মঠবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মাসাদুল মোল্লা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডায়মন্ডহারবার জেলা পুলিশ। কমিশনের বক্তব্য, ‘মর্মান্তিক ধর্ষণ এবং খুনের আবহে রাজ্যে আরও একটি ধর্ষণের ডাক দেওয়ার জন্য সমাজের কাছে মারাত্মক বিপদ সংকেত দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের ভিডিওর কথাগুলি সমস্ত নাবালিকাদের জন্য বিপদজনক। সেই সঙ্গে পকসো আইন, জুভেনাইল জাস্টিস আইন এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সংক্রান্ত চুক্তির ভিত্তিতে কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।
পাশাপাশি নন্দীগ্রাম থানায় ওই মন্তব্য উস্কানিমুলক জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ১ ব্লক নেতৃত্ব। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল হয়। ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া থেকে ঘটকপুর পর্যন্ত ওই মিছিলে যোগ দিয়ে মাসাদুল এই মন্তব্য করেছিলেন। যদিও আইএসএফের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, ‘এই ধরনের মন্তব্য দল সমর্থন করেনা। যিনি এই মন্তব্য করেছেন দায় তার।’ এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণালের বক্তব্য, ‘এখন বিরোধীরা চুপ কেন? ভয়ংকর এবং চূড়ান্ত এক বিকৃত মানসিকতার প্রমাণ এটা।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, ‘তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যারাই করে থাকুন অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচয়। আমরা চাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রত্যেকে মর্যাদা নিয়ে থাকুন। কিন্তু শুধু তিনি মর্যাদা নিয়ে থাকবেন, আর গ্রামের মহিলার মর্যাদা থাকবে না এটা যেন না হয়’।
আরও পড়ুনঃ সেমিফাইনাল হচ্ছে ঘরের মাঠেই, কিন্তু টিফো বন্ধ! চটে লাল মোহনবাগান সমর্থকরা?
এই ঘটনায় চুপ করে নেই বাম দলগুলিও। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোঃ সেলিম জানিয়েছেন, ‘যারা ধর্ষণের হুমকি দেয় তাদের বিরোধিতা করতেই হবে। অভিষেক- মমতার বাড়ি সব থেকে নিরাপদ। কিন্তু এই ভিডিও সামনে আসার পরে এফআইআর দায়ের হলো না কেন? পুলিশ তো আগে এই কাজ করবে। তা না করে টুইট করছে’। ফলে অভিষেকের শিশু কন্যার সম্পর্কে এই মন্তব্য করায় এ পর্যন্ত পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে বলেই জানা গিয়েছে।