আইএসএল(ISL) মরশুমের প্রথম ম্যাচে জাদু দেখাতে পারলো না লাল হলুদ প্লেয়াররা। 2024-25 মরশুমের সূচনাতেই বেঙ্গালুরর(Bengaluru FC) কাছে পরাজয় স্বীকার করতে হলো বাংলার ঐতিহ্যবাহী দলকে। অতীতের হারের স্মৃতি বুকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে মাঠে নামে বাংলার শতাব্দী প্রাচীন দল ইস্টবেঙ্গল(East Bengal)। ম্যাচের প্রথমেই ফাউল বিদ্ধ হন দুই দলের দুজন। যদিও আক্রমণ প্রতি আক্রমণের মধ্যেও ইস্টবেঙ্গলকে চাপে রেখেছিল সুনীল ছেত্রীরা। আর বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়দের সেই চেষ্টাতেই আইএসএলের প্রথম ম্যাচ হাতছাড়া হলো ইস্টবেঙ্গলের।
প্রথম পর্বেই পিছিয়ে গেল লাল হলুদ
গত চার আইএসএল মরশুমের একটিতেও প্লে অফে জায়গা করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। গতবারের যেই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সেরা ছয়ে ঢুকে পড়েছিল লাল হলুদ, চলতি আইএসএলের সেই ম্যাচেই প্রথম পর্বে সুনীল ছেত্রী ও ভিনিথদের থেকে 0-1 গোলে পিছিয়ে পড়লো তারা। ম্যাচের শুরুতেই বেঙ্গালুরু এফসির উপর বেঙ্গল প্লেয়ারদের তেমন একটা ভারী প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। বরং লাল হলুদকে প্রথম থেকেই কোণঠাসা করে রেখেছিল ভিন রাজ্যের প্লেয়াররা।
প্রথম 2 মিনিটেই বাজেভাবে জোরা ফাউলে নাম লেখান ইস্টবেঙ্গলের সৌভিক চক্রবর্তী এবং বেঙ্গালুরুর নিখীল পূজারি। নন্দকুমারের পর একইভাবে ফাউলের শিকার হন নুঙ্গা। প্রথম 14 মিনিটে গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেলেন সুনীল ছেত্রী। যদিও অবৈধভাবে বল কেড়ে নেওয়ায় ফাউলের ইশারা দেন রেফারি। আক্রমণ প্রতি আক্রমণের মধ্যে দিয়ে কেটে যায় দীর্ঘ সময়। ইস্টবেঙ্গলের একের পর এক ডিফেন্ডারকে ছাপিয়ে অবশেষে মাইল ফলক ছুঁয়ে ফেলেন ভিনিথ। 26 মিনিটের মাথায় ভিনিথের অনবদ্য গোল এগিয়ে দেয় বেঙ্গালুরু এফসিকে। পিছিয়ে পড়ে বাংলার দল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম গোলের পরই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে লেগে পড়েন সুনীলরা। 35 মিনিটে ফ্রি কিকের সুযোগ পেলেও বল গোল পোস্ট ছাড়িয়ে চলে যায় বাইরে। ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে খেলা গড়ায় প্রথমার্ধের শেষে। ফলাফল 0-1।
দ্বিতীয়ার্ধেই জয় বেঙ্গালুরুর
প্রথম পর্বে গোল খেয়ে দ্বিতীয় পর্বের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে মাঠে নামেন লাল হলুদ খেলোয়াড়রা। বাকি 45 মিনিটের শুরুতেই গিলের ভুলে গোলের পরিস্থিতি তৈরি হলেও বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেয় বেঙ্গালুরু এফসি। খেলা কিছুদূর গড়াতেই হিজাজি মাহেরের হাতের হলুদ কার্ড দেখেন নুনেজ। একে অপরের মধ্যে বল ভাগাভাগি করে খেলছিল বেঙ্গালুরু প্লেয়াররা। বেশ কিছুক্ষণ পর মেন্ডেজের শটে বল পায় গিল। তারপর আবারও লাল হলুদের উপর চাপ বাড়াতে থাকে বেঙ্গালুরু। বল কিন্তু তাদের পায়েই। 55 মিনিট শেষে কার্লেস কুয়াদ্রাতের সিদ্ধান্তে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের সাবস্টিটিউট হিসেবে মাঠে নামেন মাদিহ তালাল। তা সত্ত্বেও একে অপরের বিরুদ্ধে তেমন জায়গা করে উঠতে পারেননি কেউই।
স্বাভাবিকের থেকে একটু ধীর গতিতেই চলছিল লাল হলুদ প্লেয়ারদের ম্যাচ। 75 মিনিট পার করে বেঙ্গালুরকে আক্রমণ সানায় লাল হলুদের ছেলেরা, পাল্টা জবাব দেয় বেঙ্গালুরুও। এরপরই ধীরে ধীরে বেঙ্গালুরুর উপর চাপ বাড়াতে থাকে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। যদিও মাঠে নেমেই সুযোগ তৈরি করতে গিয়ে ফাউল হন মাদিহ তালাল। টানটান উত্তেজনায় দুই দলের সমর্থকরা। 90 মিনিট পেরিয়ে শেষ এক্সট্রা টাইমের ম্যাচেও চেষ্টা চালিয়ে যায় লাল হলুদ। অন্যদিকে বাংলার এই দলকে 1 ইঞ্চিও জায়গা ছাড়তে রাজি নয় সুনীল ছেত্রীর দল। অন্তিম মুহূর্তে পৌঁছে বেঙ্গালুরু এফসির পারফরম্যান্সের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। সব মিলিয়ে নতুন মরশুমের প্রথম ম্যাচেও সাফল্যের নজির তৈরি করতে পারলো লাল হলুদ। তাহলে কি পজিটিভ স্ট্রাইকারের অভাবেই হারতে হলো ইস্টবেঙ্গলকে? প্রশ্ন উঠছে সমর্থকদের মনে।