অরুণিমা মুখার্জী- সম্প্রতি নেট মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আফ্রিকার একদল মানুষ মাছ, মাংস, আলু কিম্বা পনির নয় বরং মশা ধরে ঝটপট করে বানিয়ে ফেলছে মশার বার্গার(Mosquito burger)। এই ভিডিও সামনে আসতেই উত্তাল হয়েছে সমাজ মাধ্যম।
আফ্রিকার নদী-পাশের জায়গাগুলিতে বর্ষাকাল আসতে না আসতেই বেড়ে যায় মশার উপদ্রব আর মশা মানেই ম্যালেরিয়া অথবা ডেঙ্গুর হাতছানি। তাই এই মশাকে হাতিয়ার করেই এবার শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করার উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন খাবার আবিষ্কার করলো আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া লেকের পাশের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুনঃ ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাকে শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার কুপ্রস্তা তৃণমূল নেতার
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে এলাকার আট থেকে আশি – সকলেই নিজেদের পাত্রে তেল মাখিয়ে জঙ্গলে গিয়ে ধরে ফেলছেন লক্ষ লক্ষ মশা। তারপর সেগুলিকে শুকিয়ে, গোল মন্ড তৈরি করে তা ভেজে নেওয়া হচ্ছে তেল দিয়ে। ব্যাস, এই প্রক্রিয়াতে খুব সহজেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে বার্গার প্যাটি। যদিও ভিডিও দেখা মাত্রই মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এই বার্গারের হাইজিন নিয়ে। আশঙ্কা করছেন, এই বার্গার খেলে অবধারিতভাবেই অসুস্থ হবেন মানুষজন।তাই চলুন সাধারণ মানুষের আশঙ্কাতে মন না দিয়ে বরং জেনে নেওয়া যাক পুষ্টিবিদরা কী বলছেন এই খাবার নিয়ে।
ভারতের অন্যতন জনপ্রিয় পুষ্টি বিষয়ক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ক্রিস অশোক নিজের ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিওতে জানিয়েছেন, মশা জাতীয় যেকোন পোকা মাকড়েই রয়েছে প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং উপকারী ফ্যাট। তিনি আরও জানান, যেহেতু মশার এই প্যাটিকে গরম তেলে ভেজে তারপরেই তা গ্রহণ করা হচ্ছে খাদ্য হিসাবে, তাই মশার শরীরে থাকা সকল ক্ষতিকারক রোগ বহনকারী জীবাণুর ধ্বংস প্রাথমিক অবস্থাতেই হয়ে যাচ্ছে। পুষ্টিবিদ ইপ্সিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পোকা মাকড়ে – মুরগি কিম্বা গরুর মাংসের থেকেও বেশি পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে।
প্রোটিনের পাশাপাশি, এতে উপস্থিত থাকে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, লোহা, ম্যাঙ্গানিজ এবং জিঙ্কের মত পুষ্টি উপাদানগুলিও। এছাড়াও থাকে, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। তাঁর কথায় অবশ্য কেবলমাত্র আফ্রিকাই নয়, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন জায়গাতেও এই মশা খাবার প্রচলন রয়েছে।