মহালয়ার (Mohalaya 2024) ভোরে স্নানের পর শুদ্ধ চিত্তে পরলোকগত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করাই রীতি। হাতে অঞ্জলি অথবা কুশিতে জল, তিল, দুর্বা ঘাস নিয়ে “তৃপ্যান্তি পিতরাে য়েন তৎপণয়” অর্থাৎ পিতৃপুরুষ যে বস্তু প্রদানে প্রসন্ন হন তাকে তর্পণ বলা হয়। তিল-জল এখানে অর্পণের প্রতীক। দেখে নিন, তর্পণের প্রকৃত মন্ত্র।
গরুড় পুরাণ মতে, পুত্র দ্বারাই পূর্বপুরুষের মুক্তি। মার্কণ্ড পুরাণের নির্দেশ, পিতৃপক্ষে পিতৃপুরুষকে অন্নজল দিতে হবে। পিতৃপক্ষ পুত্রের দেওয়া অন্ন-জলেই তৃপ্ত পূর্ব পুরুষ পরলোকে স্থিত হন। তাই পিতৃপক্ষের তর্পণ আর মহালয়ার শ্রাদ্ধ রীতি। পৌরাণিক কাহিনী বলে, পিতৃপক্ষ বা মহালয়াপক্ষে পিতৃপুরুষরা ফিরে আসেন মর্ত্যলোকে। মহালয়া অমাবস্যায় উত্তরপুরুষদের তর্পণ শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হলে তাঁদের বিদেহী অবিনশ্বর আত্মা তৃপ্ত হয়। আশীর্বাদ করেন উত্তরপুরুষদের। দীপান্বিতা অমাবস্যায় তাঁরা ফিরে যান অমৃতলোকে।
যজূর্বেদ অনুসারে অঞ্জলি দানের প্রথম মন্ত্র“ ওঁ উর্জং বহন্তীরমৃতং ঘৃতং পয়ঃ কীলালাং প্ররিশ্রতং, স্বধাস্থ তর্পয়ত মে পিতৃণ্।” এরপর “গােত্র- ‘উল্লেখ’, পিতা- ‘উল্লেখ’, দেবশর্মা – তৃপ্যতামেতৎ সতিলােদকং তস্মৈ স্বধা..।” এটি তিনবার উল্লেখ করতে হবে। এরপর “ওঁ আগচ্ছন্তু মে পিতর ইমং গৃহ্ণত্ত্ব পােহঞ্জলিং” অর্থাৎ “আমার পিতৃগণ, আসুন এই অঞ্জলি পরিমিত জল গ্রহণ করুন।” এই ভাবে প্রতি পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে এই একই পদ্ধতি ও মন্ত্র অনুসরণ করে তর্পণ করে জল নিবেদন করতে হবে।