হাই কোর্টের রায় খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, সংরক্ষণ সংস্কারের রায় আদালতের। সংরক্ষণ ব্যবস্থা উত্তাল গোটা বাংলাদেশ। এর মাঝেই আজ সকালে বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টে ওঠে মামলা। আর সেই মামলায় সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে দিয়েছে। সংরক্ষণ সংস্কারের কথা জানিয়েছে আদালত। আর এতে হাসিনা সরকারের পক্ষেই কিছুটা রায় গেল।
আরও পড়ুনঃ উত্তপ্ত বাংলাদেশ! দেশে ফিরলেন ৩০০ জন ভারতীয় পড়ুয়া
২০১৮ সালে সংরক্ষণ নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা গত ৫ জুন অবৈধ ঘোষণা করেছিল হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে হয় মামলা। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্টের নির্দেশ।
সরকারের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বহাল রাখেনি শীর্ষ আদালত। দেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোট সাত শতাংশ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য। বাকি দুই শতাংশ থাকবে অন্য শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত। ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে বলেছে আদালত।
১৯৭২ থেকে বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ ছিল এবং ৪৪ শতাংশ আসন সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত ছিল। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। পরে সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ হাই কোর্টে যান। গত ৫ জুন হাইকোর্ট হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ বলে রায় দেন। এরপরেই প্রতিবাদেই ফের আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। সেই আন্দোলনে গত কয়েক দিন রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বাংলাদেশ।
আন্দোলন শুরু হয়েছে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে। জারি হয়েছে কারফিউ। বাংলাদেশে শুক্রবার রাত থেকে কার্ফু জারি করেছে সরকার। যা এখনও চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা। প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০-র বেশি। রণক্ষেত্রের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বাংলাদেশে অশান্তি কিছুটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।