Durga Puja in Australia: অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরের নামটা শুনলেই আমাদের চোখে সবুজ মখমলের মতো ক্রিকেট গ্রাউন্ড, প্রায় তেমনই সবুজ পিচ, ব্রেট লি-ম্যাকগ্রাথের আগুনে পেস অথবা পার্থে অজিদের দর্পচূর্ণ হওয়ার ঘটনা মনে পড়ে৷ এখন যদি প্রশ্ন করা হয়, কোথায় গেলে আপনি বাঙালির দেখা পাবেন না? প্রশ্নটি নেহাতই অমূলক মনে হতে বাধ্য। এই পার্থেও রয়েছেন বাঙালিরা। সুতরাং বাঙালি রয়েছেন আর দুর্গাপুজো হবে না, এটা তো হতেই পারে না। তাই প্রবাসী বাঙালিরা এখানেও একজোট। একটি নয়, একাধিক দুর্গাপুজো হয় পার্থ শহরে।
১৯৯০ সালে পার্থে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিল বাঙালিদের সংগঠন ‘বেঙ্গলি এসোসিয়েশন অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ বা ‘বাওয়ার’। তারপর আরও একাধিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। পুজোর সংখ্যাও এখন একাধিক। যেমন ‘প্রবাসী বেঙ্গলি অফ পার্থ,’ বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া এসোসিয়েশন অব এসোসিয়েশন অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি। তবে পার্থে পুজো একটু অন্যরকম। দেশের মতো পঞ্চিকা মিলিয়ে পুজো করা সম্ভব হয়ে ওঠে না সংগঠনগুলির পক্ষে। তাই ভরসা পুজোর আগে বা পরের সপ্তাহান্ত।
বেঙ্গলি এসোসিয়েশন অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পুজো শুরু হয় শুক্রবারের বিকেলে দেবীর বোধন দিয়ে। তারপর শনিবার সপ্তমী-অষ্টমীর পুজো, আর রবিবার নবমী-দশমীর পুজো। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় থাকে ১০৮টি জ্বলন্ত প্রদীপের বদলে ব্যাটারির টুনি বাল্ব। ফুলের বদলে প্রতিমা ও মন্ডপ সেজে ওঠে অর্কিডে। আয়োজনের খামতি থাকলেও, খামতি থাকেনা ভক্তি ও উৎসাহে। কমিউনিটি হলে পুজোর শাড়ি, ধুতি পাঞ্জাবিতে সেজে হাজির হন সকলে। পুষ্পাঞ্জলি, ভোগ খাওয়া চলে সবকিছুই। শহরের বাঙালি পরিবারগুলিতে কদিন অরন্ধন। নিজেরাই করা হয় ভোগ রান্না। পাতে পড়ে খিচুড়ি, লাবড়া থেকে শুরু করে লুচি, আলুরদম, মিষ্টি, দই, চাটনি। দশমীতে ভাত ও পাঁঠার মাংসের ব্যবস্থাও থাকে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শাঁখ বাজানো প্রতিযোগিতা, ধুনুচি নাচ, ঢাকের বোল, সিঁদুর খেলা মিলিতে প্রবাসেই প্রতি বছর জমে ওঠে দুর্গোৎসব৷
এই বছরও সমস্ত নিয়ম রীতি মেনে পুজোর আয়োজন করছে বাঙালিদের সংগঠনটি। সাউথ পার্থ কমিউনিটি হলে হবে মাতৃ আরাধনা। তবে এবারেও পুজো সেই উইকএন্ডে। দেশের পুজো হওয়ার আগের সপ্তাহেই এখানে পুজো হয়ে যাবে। আগামী ৪ অক্টোবর, ৫ অক্টোবর ও ৬ অক্টোবর নিজেদের পুজোর নির্ঘন্ট প্রকাশ করেছে বেঙ্গলি এসোসিয়েশন অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া।