কলকাতা থেকে সিকিম (Sikkim) পৌঁছে যাওয়া হয়ে গেল আরো সহজ। আর এনজেপি এবং শিলিগুড়ি থেকে ব্রেক জার্নি করে সিকিম পৌঁছতে হবে না। যে সমস্ত পর্যটকরা কলকাতার দিক থেকে সিকিমের উদ্দেশ্যে যান, তারা সাধারণত নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা শিলিগুড়ি স্টেশন থেকে ব্রেক জার্নি করে গ্যাংটক হয়ে সিকিমে পৌঁছান। এবার নিমেষেই পৌঁছে যেতে পারবেন সিকিমে।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির সিট নাকি রাজার কুর্সি! লাক্সারির নতুন প্রতীক এই গাড়ি
ভারতীয় রেলের তরফে সিকিমের যাতায়াত আরো সহজ এবং মসৃণ করার জন্য ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে পরিকল্পিত এই প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে পৌঁছেছে। প্রথমেই পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেলপথ তৈরীর কাজ চালু হয়ে গিয়েছে। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেলপথের মূল টানেলের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, সাধারণত তিনটি পর্যায়ে এই প্রকল্পের কাজ হবে। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে সিকিমের রংপো, দ্বিতীয় ধাপে রংপো থেকে গ্যাংটক, তৃতীয় ধাপে গ্যাংটক থেকে নাথুলা পর্যন্ত রেলপথ তৈরি করা হবে। এরমধ্যেই কালিম্পং জেলায় সিকিম রেল প্রজেক্টের (Sikkim Rail Project) এই কাজে ১২টি টানেল খননের কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি কালিম্পংয়ের তিস্তার পাওয়ার স্টেশনের কাছে NHPCর ৩৯৪৩ মিটার এবং ৫৭৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ইভাকুয়েশন টানেল তৈরি করা হয়েছে। মুল টানেল হিমালয়ের চ্যালেঞ্জিং ভূতাত্ত্বিক এবং ভূমিকম্পের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এই কাজ অতিক্রম করা গেছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের ৬৬% কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আদানি-আম্বানিদের একচেটিয়া রাজত্ব শেষ করতে আসছে টাটা
সিকিম রেল প্রজেক্ট নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল (North Eastern Border Railway) জানিয়েছে, সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ৪৪.৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল পথ তৈরি হয়েছে। যেখানে ২২ টি সেতু এবং ৫টি স্টেশন থাকছে। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত যে পাঁচটি স্টেশন থাকবে তা হলো- সেবক, রিয়াং, তিস্তা বাজার, মেল্লি এবং রংপো। ২০০৯ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রেল প্রজেক্ট এর সূচনা করলেও সম্পন্ন করতে পারেননি। মাঝখানে কাজ বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন কারণে। পরবর্তীতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিকিম রেল প্রজেক্টের কাজ দ্রুতগতিতে চালু হয়ে যায়।
চীন সীমান্তবর্তী সিকিম রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি এই যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হওয়ার ফলে একদিকে যেমন পর্যটকরা খুব সহজেই বিভিন্ন জায়গা থেকে সিকিমে পৌঁছে যেতে পারবেন, ঠিক তেমনি অন্যদিকে ভারতবর্ষের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা চীন সীমান্তে আরও শক্তিশালী হবে। ফলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এই সিকিম রেল প্রজেক্ট দেশের সরকারের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।