প্রদীপ মাহাত: বর্তমানে যেভাবে দিনের পর দিন মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে চলেছে, তাতে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘ মেয়াদের প্ল্যান তৈরি করা উচিত। তার সব থেকে মূল কারণ হলো, আজ যে জিনিসটি উদাহরণস্বরূপ ধরা যেতে পারে ১০ টাকা, আপনি ৩ দিন পরে সেই জিনিসটি বাজারে যখন কিনতে যাবেন ২০ টাকা দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে কি পরিমাণে লাগাম ছাড়া জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তা সহজেই বোঝা যায়। আর এই পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে এখন আর শুধুমাত্র ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে সঞ্চয় করলেই হবে না। এবার বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে হবে। যেভাবে আপনি পরিশ্রম করেন বা খাটেন, ঠিক সেইভাবে আপনার উপার্জন করা টাকার একটি অংশকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ (Mutual Fund Investment) করেন। তাহলে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে একটা ব্যাপক পরিমাণ রিটার্ন পাওয়া যেতে পারে।
এই মুহূর্তে তাই দেশের বহু মানুষ ধীরে ধীরে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের (Mutual Fund Investment) দিকে এগোচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যাংক, ফান্ড হাউস, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বা মিউচুয়াল ফান্ড ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। এই মুহূর্তে দেশের প্রায় প্রতিটি ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম গ্রাহকদের জন্য তৈরি করেছে। এবার মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হলে সবথেকে ভালো পদ্ধতি হল এসআইপি অর্থাৎ Systematic Investment Plan প্রতিমাসে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিয়ে আপনি SIPতে বিনিয়োগ করতে পারেন। যেভাবে অনেক ক্ষেত্রে রেকারিং ডিপোজিটে বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু RD তে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ আপনি আগে থেকেই জেনে থাকেন। আর SIP করে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে, এটা যেহেতু স্টক মার্কেটের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এক্ষেত্রে রিটার্নের পরিমাণ ব্যাপক হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ: গ্যারান্টি ছাড়া লক্ষ টাকার লোন, মার্কেটিংয়ের পথ দেখাচ্ছে সরকার, এক্ষুনি আবেদন করুন
এককালীন মোটা টাকা বিনিয়োগের বদলে এসআইপির মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা বিনিয়োগ করুন। তবে মিউচুয়াল ফান্ডের এই রিটার্ন নির্ভর করে বিনিয়োগকারীরা কতখানি ঝুঁকি নিতে পারছেন তার উপর। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, এসআইপির রিটার্ন পরিবর্তনশীল। কেউ যদি বিনিয়োগের জন্য ইক্যুইটি ফান্ড বেছে নেন, তাহলে স্টক মার্কেটের উপর নির্ভর করে একটা ব্যাপক পরিমাণ লাভ হতে পারে, আবার লোকসান হতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদের এসআইপিতে বিনিয়োগ করলে একটা ভালো পরিমাণ রিটার্ন পাওয়া যায়।
যদি কোনো ব্যাংকের মিউচুয়াল ফান্ডে SIP-র মাধ্যমে বিনিয়োগ শুরু করেন, তাহলে সেই ব্যাংক তার ফান্ড ম্যানেজারদের মাধ্যমে সেই মিউচুয়াল ফান্ডে আপনার বিনিয়োগ করা টাকা নির্দিষ্ট বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিনিয়োগ করে। ফলে আপনি এসআইপিতে বিনিয়োগ করলেও আপনার মাথায় কোনো চিন্তা নেই। এর আরও একটি ভালো সুবিধা হচ্ছে, মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপির মাধ্যমে বিনিয়োগ শুরু করলে যেকোনো সময় বন্ধ করে দিতে পারেন। কোনো জরিমানা ছাড়া পুরো টাকা তুলে নিতে পারেন। তবে যে কোনো মিউচুয়াল ফান্ডে এসআই পির মাধ্যমে বিনিয়োগের আগে সমস্ত শর্তাবলী ভালো করে পড়ে দেখে নেবেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে বিনিয়োগ শুরু করবেন। তবে এক কথায় বলা যেতে পারে, এই মুহূর্তে মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপির মাধ্যমে বিনিয়োগ যথেষ্ট জনপ্রিয়।