বিক্রম ব্যানার্জী: মাদ্রাসা আধুনিকরণ প্রকল্পের আওতায় উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মাদ্রাসাগুলিতে(Madrasa) পড়ুয়াদের আধুনিক শিক্ষা প্রদানের জন্য অসংখ্য শিক্ষক নিয়োগ করেছিল সে রাজ্যের সরকার। কথা ছিল, প্রকল্পে যা ব্যয় হবে তার 60 শতাংশ দেবে কেন্দ্র, বাকি 40 শতাংশ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা। তবে বাস্তব চিত্র অনেকটাই আলাদা। বেশ কয়েক বছর ধরে যোগীরাজ্যের আধুনিক মাদ্রাসা গুলির শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য ভাতা পাচ্ছেন না বলেই অভিযোগ। এ বাবদ অর্থের যে অংশ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা ছিল তা দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের তরফে বন্ধ করে রাখা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বিয়ের যাত্রী বোঝাই বাস নদীতে পড়ে মৃত 26
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের প্রায় 7,442 টি আধুনিক মাদ্রাসায় 22 হাজার শিক্ষক অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান ও হিন্দি পড়ান। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত তারা তাদের কাজ অব্যাহত রাখলেও প্রাপ্য ভাতার টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। 1993 সালে চালু হওয়া মাদ্রাসা আধুনিকরণ প্রকল্পে মোট ব্যয়ের যে অংশ কেন্দ্রের তরফে আসার কথা সেই 60 শতাংশই 2017 সাল থেকে বন্ধ আছে। পাশাপাশি রাজ্যের তরফেও প্রকল্পের বাকি 40 শতাংশ অর্থ বন্ধ করে রাখা হয়েছে 2022-23 বর্ষ থেকে। ফলত মাদ্রাসা আধুনিকরণ প্রকল্পের অর্থ না পেয়ে একপ্রকার প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মাদ্রাসা পড়ুয়াদের ভবিষ্যত।
একই সাথে বছরের পর বছর ধরে ভাতা না পেয়ে একপ্রকার ধৈর্যের শেষ দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকরাও। এহেন আবহে রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি, সরকারের বেহাল অবস্থায় অনেকেই শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য কাজে ঢুকে পড়েছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের শিক্ষকতা করার বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় তারা কাজ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। কিছু কিছু মাদ্রাসা রয়েছে যারা কোনও মতে চাঁদা তুলে নিজেদের ফান্ড থেকে পড়ুয়াদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছেন। তবে তা হয়তো বেশিদিন চালানো যাবেনা। অন্যদিকে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলির প্রায় অচল অবস্থার জন্য তাদের কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু কল্যান মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর।
রাজ্যের আধুনিক মাদ্রাসাগুলিকে কাঠগড়ায় তুলে মন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের সাথে মাদ্রাসা আধুনিকরণ প্রকল্প নিয়ে প্রতিমুহূর্তে আলোচনা চলছে। যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রের কাছ থেকে অর্থ এনে মাদ্রাসাগুলিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে তারা বদ্ধপরিকর। তবে মাদ্রাসাগুলির অনিয়মের তথ্য প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র সরকারের তদন্তের সময় বেশকিছু মাদ্রাসায় অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। ইতিমধ্যেই 500 টিরও বেশি মাদ্রাসার স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের সংখ্যালঘু মন্ত্রীর সর্বশেষ সংযোজন, বর্তমান দুরবস্থার জন্য মাদ্রাসাগুলিই দায়ী। যারা মাদ্রাসাগুলি চালাচ্ছেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের সেখানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করছেন। সরকার আন্দাজ করছে পড়ুয়াদের বৃত্তি দেওয়ার নামে যথেষ্ট কারচুপি চলছে। বিজেপি মন্ত্রীর বক্তব্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।