এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা! বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি, সঠিক সময়ে পরিশোধও করছিলেন কিস্তি। তবে এরই মধ্যে শরীরে বাসা বাঁধে মারণ রোগ ক্যান্সার। চিকিৎসা করাতে গিয়ে একপ্রকার নিঃস্ব হতে হয় তাকে। অন্যদিকে সময় মতো ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে আরও। ব্যাঙ্কের তরফে বহুবার নোটিস পাঠানো সত্বেও কোনও সারা মেলেনি। অবশেষে শনিবার আদালতের সিদ্ধান্তে ওই ব্যক্তির ঋণ মুকুব করলো ব্যাঙ্ক। ঘটনাটি এ রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরের।
আরও পড়ুনঃ নাটক শেষে ‘জাস্টিসে’র সুর মেদিনীপুরে, দেবশঙ্কর-চৈতিরা বিচার চাইলেন
ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ মুকুব করলো আদালত
সূত্র মারফত জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় একজন পুরোহিত। বেশ কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেন তিনি। চুক্তি অনুযায়ী, মাসের নির্দিষ্ট তারিখে কিস্তিও পরিশোধ করেছেন। তবে এরই মধ্যে আগমন প্রাণঘাতী ক্যান্সারের। ভয়াবহ এই রোগের চিকিৎসায় অর্থ কষ্টে ভুগতে থাকেন ওই ব্যক্তি ও তার পরিবার। এদিকে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের বোঝাও বাড়তে থাকে দিন দিন। কিছু বুঝে উঠতে না পেরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃতীয় ন্যাশনাল লোক-আদালতে ঋণ মুকুবের দাবি জানান ওই ব্যক্তি।
ক্যান্সারে আক্রান্ত ঐ রোগীর বক্তব্য শোনার পাশাপাশি যাবতীয় তথ্য প্রমাণ দেখতে চায় আদালত। এদিন একাধিক কেস নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বিচারকেরা। তার মধ্যেও যথেষ্ট সময় দেন ওই ব্যক্তিকে। ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ ও তার শেষ কিস্তি পরিশোধের প্রমাণ দেখালে বিচারকদের তরফে মেডিকেল রিপোর্ট দেখতে চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার যাবতীয় খরচ ও মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখানোর পর ওই ব্যক্তির পক্ষেই যায় আদালত। কোর্টের রায়ে ঋণ মুকুব হলেও ব্যাঙ্ককে 5 হাজার টাকা জমা করার নির্দেশ দেন বিচারকরা। সবমিলিয়ে, আদালত এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় 5 হাজারেই মিটে গিয়েছে কেস।
প্রসঙ্গত, শনিবার একজন ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে এমন আচরণে আদালতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অনেকেই। অনেকেই আবার এই ঘটনা জানতে পেরে আঙুল তুলেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দিকে। যদিও আদালতের এই রায়ে মানসিক স্বস্তি পেয়েছেন ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা।