রাজীব ঘোষ: ভারতীয় আইনে পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলা যায়। কিন্তু সেই একই যৌন হেনস্তার অভিযোগ কি একজন মহিলার বিরুদ্ধে তোলা যেতে পারে? একজন মহিলার বিরুদ্ধে কি শ্লীলতাহানির অভিযোগ করা যায়? ভারতীয় আইনে কোন কোন অভিযোগকে যৌন হেনস্থা বলা যেতে পারে তার ব্যাখ্যা রয়েছে। এবার দেশ জুড়ে বহু আদালতে যৌন হেনস্থার অভিযোগে বহু মামলা চলছে। এবার কলকাতা হাইকোর্টের একটি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
২০১৮ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর একজন মহিলা তার মাকে হেনস্থা করার অভিযোগ করেন চারজনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে এক অভিযুক্ত সেই মামলায় নাম থাকার কারণে আদালতের দ্বারস্থ হয়। ঘটনাক্রমে ওই অভিযোগের মধ্যে চারজন অভিযুক্তর মধ্যে একজন মহিলা অভিযুক্ত রয়েছেন। তিনিই দাবি করেন, তার কোনো দোষ নেই। যে মহিলা অভিযোগ করেছিলেন তিনি জানান, তার বাড়িতে ওই অভিযুক্ত ঢুকে পড়েছিলেন যখন তিনি পোশাক বদলাচ্ছিলেন। তখনই তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি প্রলোভন দেখিয়ে যৌনতায় বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন ওই মহিলা।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে মামলাকারী মহিলা এবং তার বাবাও ছিলেন। অভিযোগকারী তার মাকে নিয়মিত অত্যাচার করা হতো বলে অভিযোগ করেছিলেন। তারপর তদন্ত করে চার্জশিট পেশ হয়। সেখানে ওই মামলাকারী মহিলার নাম ছিল। তিনি দাবি করেন আদালতে, কোনো দোষ নেই তার। তবুও চার্জশিটে তার নাম দেওয়া রয়েছে।
এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলায় সওয়ালে আইনজীবী জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এ ধারায় কোনো মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। কারণ ওই ৩৫৪ এ সেকশন এর শুরুতেই বলা আছে A Man এটা শুধুমাত্র পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই মহিলাদের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না।
কলকাতা হাইকোর্টে এই সওয়াল- জবাবের পর বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার বেঞ্চ জানায়, মামলাকারীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ হবে না। তার বাবার নাম অভিযুক্ত হিসেবে থাকবে। মামলাকারীর বিরুদ্ধে তদন্তে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আর তাছাড়া আইপিসি ৩৫৪ এ ধারায় কোনো মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। তাই এই অভিযোগ খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।