রাজীব ঘোষ~ দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের কাছে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়াটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের তরফে আয়ুষ্মান যোজনা প্রকল্প আছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে করা হয়েছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। কিন্তু বাংলার বাসিন্দা হিসেবে বহু মানুষের এখনো পর্যন্ত মমতার সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে বহু খারাপ অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে গেলে বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখিয়ে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করা হয় না। যদিও রাজ্য সরকার সেই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেরকম কোনো পরিবর্তন এখনো অবধি চোখে পড়েনি। এরপরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প (Health Insurance)। কিন্তু একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, দরিদ্র মানুষের পক্ষে এই ধরনের স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প নিয়মিত ক্রয় করাটা সম্ভবপর হয় না। ফলে অধরাই থেকে যায় উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা।
এবার সেই সমস্ত মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে চলেছেন ডক্টর দেবী শেঠি। ইতিমধ্যেই কর্নাটকের নারায়নার বেশ কয়েকটি শাখায় দেবী শেঠির এই বীমা পরিষেবা চালু হয়েছে। আপাতত কর্নাটকের তিনটি এলাকায় এই স্বাস্থ্য বীমা চালু করে দেখা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বীমার প্রভাব কতখানি সাড়া ফেলতে পারে? মূলত বেঙ্গালুরুতে নারায়ণা হেলথ-এর তরফে এই প্রকল্পের সফলতা কেমন হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আগামী দিনে সারা ভারত জুড়েই এই পরিষেবা চালু করবেন ডক্টর দেবী শেঠি, এমনটাই জানা গিয়েছে।
সাধারণ মানুষের পক্ষে যথেষ্ট সুবিধা জনক হতে পারে ডক্টর দেবী শেঠির এই প্রকল্প। এই স্বাস্থ্য বীমার নামকরণ করা হয়েছে- অদিতি (ADITI) এই প্রসঙ্গে ড: দেবী শেঠি বলেছেন, প্রায় ৭ কোটি মানুষের অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে প্রতি বছর। মাত্র ২ কোটি মানুষ সেই অপারেশন করতে সক্ষম হন। বাকি ৪ কোটি মানুষ শুধুমাত্র টাকার অভাবে অপারেশন করতে পারেন না। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ফ্র্যাকচার, সিজারিয়ান মেথড, ল্যাপরোটমি চিকিৎসা করাতেই পারেন না সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে টাকার সমস্যাই মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আর তাই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কারোর চিকিৎসা যাতে বন্ধ না হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এই স্বাস্থ্য বীমা অদিতি চালু করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ গ্যারান্টি ছাড়া লক্ষ টাকার লোন, মার্কেটিংয়ের পথ দেখাচ্ছে সরকার, এক্ষুনি আবেদন করুন
ডক্টর দেবী শেঠির স্বাস্থ্য বীমা অদিতির সমস্ত দায়িত্ব এবং পরিকল্পনা সামলাচ্ছে নারায়না হেলথ (Narayana Health) এই হেলথ ইন্সুরেন্স এ সর্বাধিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাধারণ চিকিৎসায় কভারেজ পাওয়া যাবে। আর সার্জিক্যাল কেস হলে বীমার কভারেজ পাওয়া যাবে প্রায় ১ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে দেশের মধ্যে ১ কোটি টাকা কভারেজ পেতে হলে বার্ষিক প্রিমিয়াম দিতে হবে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। আর সেই জায়গায় অদিতি বীমা প্রকল্পে বার্ষিক প্রিমিয়াম থাকছে মাত্র ১০ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রতিমাসে ১ হাজার টাকার কম এই বীমা প্রকল্পে জমা করলেই ১ কোটি টাকার কভারেজ মিলবে।
স্বাস্থ্য বীমা সম্বন্ধে নারায়ণা হৃদয়ালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান বীরেন প্রসাদ শেঠি জানিয়েছেন, ৪ সদস্য যুক্ত একটি পরিবারকে অদিতি কভারেজ দেবে। ৪জনের মধ্যে অন্তত একজনের বয়স ৪৫ বছরের বেশি হতে হবে। আর এই প্রকল্পের জন্য বছরে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিলেই হবে অর্থাৎ প্রতি মাসে ১ হাজার টাকার কম বা প্রতিদিনের হিসেবে ৩০ টাকার একটু বেশি জমা দিয়ে পাওয়া যাবে ১ কোটি টাকার স্বাস্থ্য বীমার কভারেজ। স্বাভাবিকভাবেই বলা যেতে পারে, আগামী দিনে সারা ভারত জুড়ে ডক্টর দেবী শেঠির এই স্বাস্থ্য বীমা অদিতি প্রকল্প চালু হলে উপকৃত হবেন একেবারে সাধারণ, নিম্নবিত্ত, গরীব শ্রেণীর মানুষেরা।