বিক্রম ব্যানার্জী: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে(Cyclone Fengal) পরিণত হয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধি দফতর(আইএমডি) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি(Cyclone Fengal) গতি বাড়িয়ে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার বিকেলের মধ্যে তামিলনাড়ুর পুদুচেরিতে আঘাত হানবে।
সূত্রের খবর, শনিবার উত্তর তামিলনাড়ু উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় 90 কিলোমিটার। ঝড়ের পূর্বাভাস হিসেবে ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুর উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি দমকা হওয়ার দাপট শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরি উপকূলে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। পাশাপাশি তুমুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় স্কুল, কলেজ ও অফিসগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধি দফতর বলছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবারই ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছিল। গত 6 ঘন্টায় দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে তা ক্রমশ উত্তর-উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়েছে। শনিবার সকালে চেন্নাই শহর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের দূরত্ব ছিল 190 কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। অন্যদিকে পুদুচেরি থেকে ঘূর্ণিঝড়টি 180 কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল। আবহাওয়াবিদদের মতে আগামী কয়েক ঘণ্টায় ক্রমশ গতি বাড়িয়ে বিকেলের মধ্যে তা স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূল হয়ে কারইকাল এবং মহাবলীপুরমের মধ্য দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে বলেই মনে করছেন আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞরা। স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় 70 থেকে 80 কিলোমিটার। যা সর্বোচ্চ 90 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার গতি ছুঁতে পারে। আবহাওয়া দফতর বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর তা ক্রমশ শক্তি হারাবে। যার জেরে আগামী সোমবার পর্যন্ত তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পুদুচেরি ও কর্ণাটকের বেশ কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিপর্যয় এড়াতে ইতিমধ্যেই নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রশাসন। তামিলনাড়ুর বিভিন্ন এলাকাজুড়ে খোলা হয়েছে 2 হাজারেরও বেশি ত্রাণ শিবির। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে এমন উপকূলবর্তী এলাকা গুলি থেকে সাড়ে 400-রও বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই সাথে চালু করা হয়েছে 24 ঘন্টার হেল্পলাইন নম্বর।
বলা বাহুল্য, পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ফিনাজালের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে না। তবে তামিলনাড়ু উপকূল মুখী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। সেই সাথে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় সকাল থেকেই ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী বেশ কিছু জায়গায় শনি ও রবিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: চোরাপথে ভারত ছাড়ার পরিকল্পনা, মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার দালালসহ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী