এবার জমিরও হবে আধার কার্ড (Bhu Aadhaar)! অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্প্রতি পেশ করা বাজেটে ভূ-আধারের (Bhu Aadhaar) কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর প্রস্তাবিত এই আধারে সব জমির একটি করে আইডেন্টিফিকেশন-নম্বর থাকবে। গ্রামাঞ্চলের ভূমি সংস্কারের জন্য একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী সমস্ত জমির ইউনিক ল্যান্ড পার্সেল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা ভূ-আধার থাকবে। বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে ভূমি সংস্কারের কাজ শেষ করবে সরকার।
বর্তমানে আমাদের দেশে সাধারণ মানুষজনের একটি নির্দিষ্ট আধার নম্বর রয়েছে। ১৪ ডিজিটের একটি নম্বরে ঐ ব্যক্তির সমস্ত তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষিত থাকে। একই ভাবে নির্দিষ্ট ভূ-আধার তথা ইউনিক ল্যান্ড পার্সেল আইডেনটিফিকেশন নম্বর বা ইউএলপিআইএন এর মাধ্যমেও জমির সমস্ত তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষিত থাকবে। এই কার্ডের মাধ্যমে জমি সনাক্তকরণ নম্বর, জমির ম্যাপিং ও মালিকানা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি থাকবে প্রশাসনের কাছে।
এই ভূ-আধারের একাধিক সুবিধার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা-
১. জমি সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে সনাক্তকরণ নম্বর, জমির ম্যাপিং ও মালিকানা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সহজেই খতিয়ে দেখা সম্ভব হবে সরকারি ভাবে।
২. এর ফলে জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান সহজ হবে।
৩. জমি সনাক্তকরণ সুবিধাজনক হবে।
৪. কৃষকদের জমি চিহ্নিত বিভিন্ন সুবিধা ও অনুদান সরাসরি পৌঁছে দেওয়া বা কৃষি ঋণ দেওয়া সহজ হবে।
৫. সরকার নীতি নির্ধারণের জন্য সঠিক জমির তথ্য সহজেই পাবে৷
ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ২৪টিতে জমির রেকর্ড কম্পিউটারাইজ করা হয়েছে। শুধুমাত্র উত্তর-পূর্বের চারটি রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম এবং সিকিমে ভূমি রেকর্ড সম্পূর্ণরূপে কম্পিউটারাইজড নয়। মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ – এই ৫ রাজ্যে শহর এবং গ্রামীণ সম্পত্তির জন্য পৃথক জমির রেকর্ড রয়েছে। ফলে সারাদেশ জুড়ে ভূ-আধার চালু হলে প্রতিটি রাজ্যের সমস্ত জমির জন্য তিন বছরের মধ্যে ইউএলপিআইএন চালু করে তথ্য একত্রিত করা সহজ হবে না।
এছাড়া ভারতের অনেক রাজ্যে স্ট্যাম্প ও রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড এবং রাজস্ব বিভাগের রেকর্ডগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। অনেক রাজ্যে অনলাইন মিউটেশনের জন্য একটি জমি বা সম্পত্তি নিবন্ধন করা হলে সেই তথ্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে রাজস্ব বিভাগে যায় না। ভূমি বিভাগের ডিজিটাল ম্যাপিং এখনও সব রাজ্যে করা হয়নি। অনেক রাজ্যেই এখনও নিজস্ব পরিমাপ এককের মাধ্যমে জমির পরিমাপ রেকর্ড করা হয়। কোথাও বর্গফুট তো কোথাও বর্গ মিটার। কোথাও আবার গ্রামীণ অঞ্চলে জমির রেকর্ডগুলি বিঘা, বিশ্ব, বিশ্বনী, কানাল, মার্লা, দশমিক, সেন্ট, গুন্টা প্রভৃতি স্থানীয় পরিমাপে পরিমাপ করা হয়। এই সমস্ত তথ্যের সমন্বয় সাধন ও একত্রিতকরণ যথেষ্ট জটিল। ফলে ভূ-আধার দেশ জুড়ে চালু করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারকে।