১৯০১ সালে হাওড়ার সঙ্গে যোগাযোগ সুগম করতে তৈরি হয় মেদিনীপুর স্টেশন। কারন তখন সড়ক পথে মেদিনীপুরের (Midnapore) সঙ্গে রাজ্যের রাজধানী কোলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। রেল লাইন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হয়। মেদিনীপুর স্টেশনের(Midnapore station) ঐতিহাসিক গুরুত্বও কম নয়, প্রাক স্বাধীনতা যুগে ও পরবর্তীতে গৌরবময় বঙ্গ সন্তানদের উপস্থিতিতে ধন্য হয়েছে মেদিনীপুর স্টেশন(Midnapore station)। বাংলা সিনে দুনিয়ায় “বসন্ত বিলাপ” নামক অমর সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে মহিমান্বিত করেছে মেদিনীপুর স্টেশন(Midnapore station)। সে সব ছিল মেদিনীপুর স্টেশন ও মেদিনীপুর জেলাবাসীদের কাছে গৌরবময় দিন।
আরও পড়ুনঃ রাজা নরেন্দ্র লাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র উৎসব ও বইপ্রকাশ
তবে এসব এখন অতীত, যে কারনে মেদিনীপুর স্টেশন(Midnapore station) তৈরি হয়, সেই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে করোনা পরবর্তী সময়ে মেদিনীপুর থেকে হাওড়া ট্রেন চলে বটে কিন্তু সময় বলা খুবই মুশকিল। বাধ্য হয়ে জেলাবাসীদের অতিরিক্ত টাকা ও সময় খরচ করে সড়ক পথে বাসে করেই পৌঁছাতে হচ্ছে গন্তব্যে। যেখানে মেদিনীপুর থেকে হাওড়া লোকাল ট্রেনে ও এক্সপ্রেসে ভাড়া যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৭৫ টাকা সেখানে বাসে গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা যা জঙ্গল মহলের দিন আনি দিন খাই মানুষের কাছে খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়।
মেদিনীপুর(Midnapore) থেকে কোন লোকাল কবে শেষ সঠিক সময়ে হাওড়া পৌঁছেছে বা হাওড়া থেকে মেদিনীপুরে কেউ বলতে পারবে বলে মনে হয়না। তাহলে প্রশ্ন থাকতে পারে রেল কর্তৃপক্ষ কী এ ব্যপারে কিছুই জানেন না।
মেদিনীপুর-হাওড়া এর এক প্রাত্যহিক যাত্রীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা কথা হলে তিনি বলেন, “Indian Railway এর RailMadad বলে একটি মোবাইল Application আছে, তাতে অভিযোগ জানানোও হয়েছে বহুবার তবে সুরাহা মেলেনি। বিভিন্ন সময় উন্নয়নমূলক কাজের অজুহাত দেখানো হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক বয়স্ক (আনুমানিক ৫০) যাত্রীকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি রেলের প্রতি তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন। “প্রায় ২০ বছর ধরে এই লাইনে যাতায়াত করি গত কয়েক বছর ধরে রেলের কী হয়েছে জানিনা, একদিনও সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি। এক্সপ্রেসের নাম করে শিরোমনির ( রানী শিরোমনি এক্সপ্রেস) ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বেশিকিছু বলতে গেলেই ওরা মিথ্যা কেস দেওয়ার হুমকি দেয়, কে করবে আন্দোলন কেই বা লড়বে, সবাই যখন চুপ আমার দরকার কী আর কয়েকটা বছর কাজ আছে তারপর আর ডিইলি প্যাসেঞ্জারি করব না।”
আরও পড়ুনঃ ছেলে বৌয়ের যা রুদ্রমূর্তি, বাপ রে বাপ….রোজ বাবা-মাকে মারতো ছেলে বৌমা
তিনি আরও বলেন, “এই লাইনে মালগাড়ি চলে সঠিক সময়ে কিন্তু প্যাসেঞ্জার ট্রেনের টাইম নেই, এরা প্যাসেঞ্জার ট্রেন থামিয়ে মালগাড়ি পাশ করায়। খড়গপুরে তো সবগুলো বাইরের মা*ল বসে আছে ওদের টাকা এলেই হলো মালগাড়ি তে বেশি প্রফিট ওরা কী করে বুঝবে আমাদের জেলার মানুষের দুঃখের কথা।”
এই অভিযোগ শুধুমাত্র একজন বা দু জনের নয়। জেলার প্রায় প্রতিটি ট্রেন যাত্রীর অভিযোগ এক। সবাই চাই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে। আবারও আগের চেনা ছন্দে ফিরে আসুক মেদিনীপুর-হাওড়া লোকাল। কিন্তু কবে এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি মিলবে তার উত্তর অধরাই।