নিসর্গ নির্যাস মাহাতো: মহাফেজখানা মেদিনীপুরে(Medinipur) ছিলই। তবে সাধারণত জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। মহাফেজখানা থেকে চুঁইয়ে পড়ত জল। সাপের ভয়। উপযুক্ত সংস্কারের পরে সেই মহাফেজখানার দ্বার উন্মুক্ত হলো ইতিহাস প্রিয় মানুষদের জন্য। গড়বেতা ও মোঙ্গলাপোতা নিয়ে গবেষণার কাজে ঐতিহাসিক এই মহাফেজখানার বিভিন্ন নথি পরিদর্শনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন আইনের সহকারী অধ্যাপিকা সুস্মিতা হালদার। তবে তখন তা ছিল প্রবেশের অযোগ্য। অবশেষে জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরীর তৎপরতায় সংস্কার হয়ে খুলে গেল প্রাচীন নথি সমৃদ্ধ মহাফেজখানা। উদ্বোধন করলেন জেলাশাসক।
আরও পড়ুনঃ ঠান্ডাঘরে থাকা রেলপথের কথা সংসদে বললেন সায়নী ও মিতালি,লালগড়-ঘাটালের কথা মনে নেই কারও
মহাফেজখানার নথি দেখার জন্য গত ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর আইনের সহকারী অধ্যাপিকা আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসকের দফতরে। এরপরে গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মেইলের মাধ্যমে একই কারণে জেলাশাসকের কাছে আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি। তখন অবশ্য মহাফেজখানার পরিস্থিতি ঢোকার মত ছিল না। ছিল সাপের ভয়। নথিগুলিও রাখা ছিল স্তূপাকৃতি অবস্থায়। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। এছাড়াও নথিগুলি দেখলে তা ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় ছিল। তবে এখন অবশ্য আর সেই বাধা নেই।
কী আছে এই মহাফেজখানায়? তালপাতায় লেখা নির্দেশ, প্রথম জনগণনা, বিভিন্ন চিঠি, মানচিত্র, বিভিন্ন আদেশ- সবই প্রাচীন। ১৭০০-১৮০০ সময়কালের বিভিন্ন নথিও রয়েছে। মানে, দেশ তখন পরাধীন।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, মহাফেজখানা সংস্কার করে বহু নথি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখনও চলছে সংরক্ষণের কাজ। বহুমূল্যবান নথি ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এতে উপকৃত হবেন ইতিহাসের শিক্ষার্থী ও গবেষকরা। প্রসঙ্গত, মহাফেজখানা নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অধিকারিক বরুন মণ্ডলও।
আরও পড়ুনঃ গভীর সংকটে পশ্চিম মেদিনীপুর! নাবালিকাদের নিয়ে বাড়ছে সমস্যা
মহাফেজ খানা সংস্কার করে তা ইতিহাস প্রিয় মানুষদের জন্য খোলা হয়েছে জানতে পেরে সহকারী অধ্যাপিকা সুস্মিতা বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নজির সৃষ্টি করল। গবেষকরা অজানা তথ্য খুঁজতে পারবেন সহজে। অন্যান্য জেলার মহাফেজ খানাগুলিও সংস্কার করে তা ইতিহাস প্রিয় মানুষদের জন্য খুলে দেওয়া দরকার। এতে সমৃদ্ধ হবে জেলা, রাজ্য তথা দেশ। উঠে আসবে অজানা ইতিহাস।
সূত্রের খবর, জেলাশাসক দফতর চত্বরে থাকা মিউজিয়ামেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।