বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড়ে (Susunia Hill) শত শত বীজ ‘বোমা’ ফেলছে বন দফতর! বন দফতরকে সাহায্য করছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং একাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা। বন মহোৎসবের মাঝে এই বীজ সম্বলিত বোমা ফেলে শুশুনিয়া (Susunia Hill) পাহাড়ে সবুজায়ন লক্ষ্য বন দফতরের।
জীববৈচিত্রের দিক থেকে বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীট-পতঙ্গ, সরীসৃপ থেকে বিভিন্ন প্রাণীর বিচরণক্ষেত্র সেটি। এছাড়াও শুশুনিয়া রাজ্যের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটনস্থলও বটে। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে ক্রমশ সবুজ কমছিল এই পাহাড়ে। স্থানীয় পাথর খোদাই শিল্পীরা পাহাড়ের গা থেকে পাথর সংগ্রহ করতেন, ফলে পাহাড়ের গায়ে তৈরি হয়েছ্র বহু গর্ত। সেই গর্তে আর জন্মায়নি নতুন গাছ। লাগাতার দাবানলেও ধ্বংস হয়েছে বহু গাছ। এই পরিস্থিতিতে শুশুনিয়া পাহাড়ে ফের গাছ লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। নেওয়া হচ্ছে অভিনব পন্থা।
আরও পড়ুনঃ ইউটিউব চ্যানেলের ‘ভিউ’ বাড়াতে হাতিকে উত্যক্ত করে বানানো হচ্ছে ভিডিও, কড়া পদক্ষেপের পথে বন দফতর
বন দফতরের উদ্যোগে পাহাড়ের গা থেকে পাথর সংগ্রহ বন্ধ হয়েছে। দাবানল ঠেকাতেও একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এবার নতুন গাছ লাগাতে পরীক্ষামূলক ভাবে পাহাড়ের ন্যাড়া অংশে বীজ বোমা ছোঁড়া হচ্ছে। গত বছরও একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ের পাথুরে অংশে বীজ ছড়ালেও অঙ্কুরোদগমের পর শিকড় মাটিতে প্রবেশ করছে না। তাই নির্দিষ্ট অনুপাতে গোবর, জৈব সার এবং মাটি মিশিয়ে প্রথমে মণ্ড তৈরি করা হচ্ছে। তার সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে এক বা একাধিক গাছের বীজ। এবার সেই মণ্ড ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে পাহাড়ের ন্যাড়া অংশে।
এর ফলে বৃষ্টিতে সেই মণ্ড রুক্ষ পাথর ও কাঁকরে ঢাকা মাটিতে ছড়িয়ে গিয়ে মাটির স্তর তৈরি করবে। মণ্ডতে থাকা বীজের অঙ্কুরোদগম হলে শিকড় মাটির স্তরে সহজেই প্রবেশ করবে। চারা গাছ বড় হলে পাথরের আস্তরণ ভেদ করে মাটিতে ছড়িয়ে পড়বে। বন দফতর ও প্রকৃতিবিদদের আশা শুশুনিয়া পাহাড়ে বৃক্ষ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা নেবে এই বীজ বোমা।