Durgapur: দুর্গাপুরের সরকারি স্কুল দেখে অভিভূত, সূদুর আমেরিকা থেকে টাকা পাঠালেন অধ্যাপক

Published On:
লেটেস্ট আপডেট সবার আগে Join Now

রাজীব ঘোষ: বাংলার সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো এবং শিক্ষা ব্যবস্থা দেখে অভিভূত হলেন আমেরিকার একজন অধ্যাপক। আর তারপরেই তিনি সরকারি ওই স্কুলের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের(Durgapur) নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের পরিকাঠামো সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে সুদূর আমেরিকার পেন ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডঃ দীপেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য অভিভূত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অধ্যাপক দীপেন্দ্র নারায়ণের কথায়, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলের এই ধরনের ঝকঝকে তকতকে পরিকাঠামো দেখে অভিভূত। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তখনই তিনি আর্থিক সাহায্য করার জন্য আবেদন করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজি হয়ে গেলে তখনই দেড় লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য দেন অধ্যাপক দীপেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য। নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের তরফে তার দেওয়া দেড় লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট (FD) করা হয়। আর সেখান থেকে বার্ষিক সুদ হিসেবে প্রাপ্ত ১০০০০ টাকা মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিতে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের হাতে পুরস্কার স্বরূপ তুলে দেওয়া হয়। এবার সেই পুরস্কার পেয়েছেন রুপেশ কুমার রায়।

পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শংসাপত্র এবং পুরস্কার প্রদানের জন্য একটি সম্মান জ্ঞাপক সমারোহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২৪ সালের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলের সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ১০ জন ছাত্রছাত্রীকে শংসাপত্র প্রদান এবং পুরস্কৃত করা হয়। শীর্ষ তিনজন ছাত্র-ছাত্রীকে ২০০০, ১৫০০ এবং ১০০০ টাকা পুরস্কার স্বরূপ তুলে দেওয়া হয় এবং সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন DC (East) অভিষেক গুপ্তা, ACP (Durgapur) সুবীর রায় এবং শিক্ষক নুরুল হক সহ অন্যান্য বিশিষ্টজন। এই সমারোহ অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ধনুষধারী রায় একাডেমিক এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড এর জন্য ২০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে। এই অ্যাওয়ার্ড এর মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয়ে থাকে। আর সেই একাডেমিক এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডের কারণে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের আজীবন খরচ বহন করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। স্কুলের এই সম্মান জ্ঞাপক সমারোহ আয়োজনের অনুষ্ঠানে পুরস্কারগুলি স্কুলের প্রাক্তন সভাপতি রাজেন্দ্র সিং মহাশয়ের সৌজন্যে বিতরণ করা হয়।

আমেরিকার পেন ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডঃ দীপেন্দ্র নারায়ন ভট্টাচার্য নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের ঝকঝকে পরিকাঠামো সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) দেখে অভিভূত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন। তার বাবা, মা, উপেন্দ্র নারায়ণ এবং শোভনা দেবীর নামে তিনি এই পুরস্কারটি উৎসর্গ করতে চান বলে জানান। প্রতিবছর ওই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিতের সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপককে ১০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দিতে চেয়ে আবেদন করেন ডঃ দীপেন্দ্র নারায়ন ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুনঃ নিয়োগ দুর্নীতির মাথা ধরতে ওএমআর শিটের খোঁজ, হাইকোর্টের নির্দেশে ময়দানে সিবিআই

এই প্রসঙ্গে নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কলিমুল হক জানান, সুদূর আমেরিকা থেকে Pen West ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক দীপেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের এই স্কুলের পরিকাঠামো দেখে অভিভূত হয়ে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, তার বাবা-মায়ের নামে মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রতিবছর গণিতের সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের হাতে ১০০০০ টাকা আর্থিক পুরস্কার তুলে দিতে চান। দীপেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য তাকে এও জানান, সরকারি স্কুলের এরকম পরিকাঠামো আগে দেখিনি। আপনাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। সেই সময় প্রধান শিক্ষক তাকে তার আবেদনে সম্মতি জানালে অধ্যাপক দীপেন্দ্র নারায়ণ দেড় লক্ষ টাকার একটি চেক স্কুল কর্তৃপক্ষকে দেন। আর সেই টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জমা করে রাখা হয়েছে। তার থেকেই বার্ষিক সুদ হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে গণিতে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। অধ্যাপক দীপেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্যের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। পশ্চিমবঙ্গের একটি সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে সুদুর আমেরিকা থেকে একজন অধ্যাপকের এই আর্থিক সাহায্যের ফলে ছাত্র-ছাত্রীরাও অনুপ্রাণিত হবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।