চিফ রিপোর্টার- অর্পণ ভট্টাচার্য্য
শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরে (Midnapore) ফের বন্যার সতর্কতা। জল বাড়ছে ঘাটালে (Ghatal)। জলস্তর উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে নদীগুলিতে। ইতিমধ্যে অনেক নীচু এলাকা জলে ডুবেছে। অনেক জায়গায় ভেসে গিয়ে নদীর উপরের সাঁকো৷ অন্যদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি ক্রমশ ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যাচ্ছে। সেই সংবাদে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পশ্চিম মেদিনীপুর তথা ঘাটালবাসী।
নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিম মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি চলছে। সোমবার সকালের পর থেকে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমলেও সোমবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ায়। মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা পশ্চিম মেদিনীপুরে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে থাকা নিম্নচাপটি আগামী ১২ ঘন্টায় ক্রমশ গভীর থেকে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর ছত্তীসগঢ় সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করবে। এই পূর্বাভাস পশ্চিম মেদিনীপুরে তৈরি করেছে বন্যার ভ্রুকুটি।
ইতিমধ্যে গভীর নিম্নচাপের কারণে গত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিম মেদিনীপুর তথা ঘাটাল সংলগ্ন এলাকায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫১.৪০ মিলিমিটার। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী, রূপনারায়ণ, কাঁসাই। সোমবার সকালের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সকাল ১০ টায় শিলাবতীর জলস্তর বাঁকায় ১৫.৯২ মিটার, গাদঘাটে ৭.৯০ মিটার। রূপনারায়ণের জলস্তর বন্দরে ৬.৮৫ মিটার, রাণীচকে ৪.৯৮ মিটার, গোপালগঞ্জে ৩.৬৫ মিটার। কাঁসাই নদীর জলস্তর সকাল ১০ টায় কলমিজোড়ে ১০.১০ মিটার। গতকাল থেকেই নদীগুলির জলস্তর দ্রত বেড়েছে। ঘাটাল পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ড ইতিমধ্যেই জলমগ্ন। জলমগ্ন হয়েছে চন্দ্রকোনার বেশ কয়েকটি গ্রামও। চন্দ্রকোনার ধান্যঝাটি থেকে রায়ল্যা যাওয়ার রাস্তা জলে ডুবেছে। চরম সমস্যায় পড়েছেন এলাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন। চলছে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত।
অন্যদিকে বৃষ্টিতে বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকাও জলমগ্ন। দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, কংসাবতী, শালী সহ জঙ্গলমহলের প্রায় সব নদনদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন নিম্নচাপের কারণে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি শুরু হলে সেই জল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।