চিফ রিপোর্টার- অর্পণ ভট্টাচার্য
Midnapore: মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে (Midnapore Medical College) প্রসূতি মৃত্যুর আবহে সংশ্লিষ্ট সংস্থার স্যালাইনকে কালো তালিকাভুক্ত করলো রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে শনিবার ঘটনার তদন্তে এসে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের (Midnapore Medical College) সুপার, অধ্যক্ষ, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, বিভিন্ন সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স প্রমুখদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলো স্বাস্থ্য দফতর গঠিত ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি। মৃতা ও অসুস্থ প্রসূতিদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্যালাইন, ঔষধ, অ্যানাস্থেশিয়া প্রভৃতির নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তদন্ত কমিটির তদন্তের মাঝেই মেদিনীপুর (Midnapore) মেডিকেল কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস ও বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবার রাতে সিজারের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৫ জন সিজার রোগিনী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মেডিকেল কলেজের সিসিইউ বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় ৩ জনকে। কিন্তু শুক্রবার সকালে মামণি রুইদাস (২৪) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। বুধবার এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। রোগিনীর পরিজনদের অভিযোগ, ভুল বা মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার ফলেই রোগিনীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার ফলেই মৃত্যু৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তেজনা তৈরি হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্ত্বরে। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। এখনও তিন জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। দু’জন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। আর এক জন আইসিইউ-তে ভর্তি। প্রসূতিদের যে স্যালাইন এবং ওষুধ দেওয়া হয়েছিল, তার নমুনা পরীক্ষা করছে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। ঘটনার তদন্তে স্বাস্থ্য দফতর কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি শনিবার মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে আসে।
ইতিমধ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতর নির্দেশ দিয়েছে নির্দিষ্ট একটি সংস্থার ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট’ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে না। অন্যদিকে শনিবার মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে তদন্তে আসে তদন্ত কমিটি। মেডিকেল কলেজের সুপার জয়ন্ত রাউত, অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশংকর সারেঙ্গী, সিনিয়র চিকিৎসক প্রমুখদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ চলে বৈঠক। অসুস্থ রোগিনীদের শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়েও দেখেন তাঁরা। প্রশ্ন ওঠা সংস্থার স্যালাইন ব্যবহার হয়েছিল কিনা, অ্যানাস্থেশিয়ার ক্ষেত্রে কী কী ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছিল, নির্দিষ্ট সংস্থার স্যালাইন হাসপাতালে এখনও মজুত আছে কিনা প্রভৃতি বিষয় তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখে বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে। যদিও সাংবাদিকদের সামনে তদন্ত নিয়ে বিশেষ মুখ খোলেননি তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
বিক্ষোভের আশঙ্কায় শুক্রবার থেকেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ চত্ত্বরে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির আগমনের মাঝেই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। ডিওয়াইএফআই বিক্ষোভ দেখায় হাসপাতাল সুপারের অফিসের সামনে। বিক্ষোভ দেখায় কলেজের গেটের সামনে। পরে হাসপাতালের সামনে রাস্তাও অবরোধ করা হয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন ডিওয়াইএফআই সমর্থকেরা। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়।