কুয়েতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে (Kuwait Fire) মৃত ৪৯ জনের মধ্যে ৪১ জন ভারতীয়। বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছিল বিদেশমন্ত্রক। কুয়েতের (Kuwait) সেই সর্বগ্রাসী অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুরের বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক দ্বারিকেশ পট্টনায়েকের। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে মেদিনীপুর শহরের (Medinipur) শরৎপল্লীতে। জানা গেছে, দাঁতনের তুরকাতে বাড়ি ছিল দ্বারিকেশের। বছর পাঁচেক আগে মেদিনীপুর শহরে বাড়ি করেন তিনি। তার স্ত্রী এবং এক মেয়ে থাকতেন শরৎপল্লীর সেই বাড়িতেই।
মৃত শ্রমিকের পরিবার সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দ্বারিকেশের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। তবে দ্বারিকেশ যে কোম্পানিতে কাজ করতেন তাদের তরফে জানানো হয়েছে কুয়েতের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন দ্বারিকেশ। কয়েকবছর আগে মেদিনীপুর শহরের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। কথা ছিল মেয়ের জন্মদিন এবং দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে সেপ্টেম্বর মাসে বাড়িতে ফিরবেন দ্বারিকেশ। তবে কুয়েতের ওই অগ্নিকাণ্ড লণ্ডভণ্ড করে দিল সবকিছু।
দ্বারিকেশের শ্যালক জানান, “জামাইবাবু প্রতিদিন সকালে ফোন করতেন। ঘটনার দিন বিকাল পর্যন্ত কোন ফোন না আসায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। তখন জামাইবাবুর সহকর্মীদের ফোন করে জানতে পারি যেখানে জামাইবাবু কাজ করতেন সেখানে আগুন লেগেছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল জামাইবাবু নিখোঁজ। পরে মৃত্যুর খবর জানানো হয়।”
পুজোতে বাবা বাড়ি আসবে। একসঙ্গে কাটানো যাবে জন্মদিন, ঘর ভরে উঠবে আলোয়। সেই আনন্দে উদ্বেল ছিল দ্বারিকেশের মেয়ে। অথচ এখন দ্বারিকেশের ঘোড়জোড়া অন্ধকার। বাবা আর ফিরবে না। হাসিমুখে জড়িয়ে ধরবে না তাকে, পুজোয় আনবে না নতুন জামা। দ্বারিকেশের মেয়ের চোখে শুন্যতা। শোকস্তব্ধ মায়ের পাশে বসে অপেক্ষার প্রহর গোনে সে। কখন বাবার কফিনবন্দি দেহটা ঘরে ফিরবে।