Jhargram: ধর্ষণে অভিযুক্ত ফেরার ৫ বছর, কাশ্মীরে পাকড়াও

Published On:
লেটেস্ট আপডেট সবার আগে Join Now

স্বপ্নীল মজুমদার: অভিযোগ দায়ের হওয়ার পাঁচ বছর পর ধর্ষণে(Rape) অভিযুক্ত এক কাশ্মীরী(Kashmir)যুবককে গ্রেফতার করল ঝাড়গ্রাম(Jhargram) মহিলা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রিয়াজ় আহমেদ রায়না। তার বাড়ি জম্মু ও কাশ্মীরের(Jammu& Kashmir) অনন্তনাগ জেলার মাট্টন থানার অকাড গ্রামে।

ঝাড়গ্রাম(Jhargram) মহিলা থানার সাব ইন্সপেক্টর জ্যোতি সাউয়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত শনিবার অকাড গ্রামে হানা দিয়ে রিয়াজকে পাকড়াও করে। এরপর অনন্তনাগ জেলা আদালতে রিয়াজকে হাজির করে পাঁচদিনের ট্রানজিট রিমান্ড নেওয়া হয়। ধৃতকে বুধবার ঝাড়গ্রামের(Jhargram) বিশেষ দায়রা আদালতে হাজির করা হয়। অভিযুক্তকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

অভিযোগ, ঝাড়গ্রামের(Jhargram) এক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ কয়েকবার সহবাস করেছিল রিয়াজ়। ২০১৫ সালে ফেসবুকে রিয়াজের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। কাশ্মীরী শাল বিক্রির দৌলতে দু’জনের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়। এরপরই দু’জনের মধ্যে ক্রমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিভিন্ন সময়ে কলকাতা ও বাইরে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে সম্ভোগ করে রিয়াজ। এরপর বিভিন্ন সময়ে মায়ের অসুস্থতা ও পরিবারের প্রয়োজনের কথা বলে ওই তরুণীর থেকে টাকা আদায় করে রিয়াজ।তরুণী স্কুল শিক্ষিকা হওয়ায় টাকা দিতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু ক্রমে টাকার দাবিতে চাপ বাড়াতে থাকে রিয়াজ।

ওই তরুণীর সঙ্গে তার আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাক মেল করে কয়েক দফায় মোট সাত লক্ষ টাকা আদায় করেছিল রিয়াজ়। রিয়াজকে টাকা দেওয়ার জন্য ওই তরুণীকে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিতে হয়েছিল। তরুণী পরে বুঝতে পারেন, রিয়াজ তাকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছে সম্ভোগ করেছে, তারপর ঘনিষ্ঠ অবস্থার ছবি ভিডিয়ো করে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে।

রিয়াজের স্বরূপ বুঝতে পেরে ওই তরুণী টাকা ফেরতের দাবি জানায়। কিন্তু অভিযোগ টাকা ফেরত তো রিয়াজ দেয়নি। উল্টে সে তরুণীকে খুনের হুমকি দেয়। এরপর যোগাযোগ ছিন্ন করে গা ঢাকা দিয়েছিল ওই কাশ্মীরী যুবক। ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম(Jhargram) মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গ ও জালিয়াতির ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবনিও নেওয়া হয়। তবে রিয়াজের হদিশ মেলেনি। ওই তরুণী আদিবাসী সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে মামলায় পরে আদিবাসী নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনের ধারা যুক্ত করা হয়। চলতি বছরের ৬ জুন রিয়াজকে ফেরার দেখিয়ে ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রামেই যেন কলকাতা হাইকোর্ট! হয়ে গেল উদ্বোধন

এরপরই রিয়াজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। অবশেষে পুলিশ জানতে পারে কাশ্মীরে নিজের গ্রামে ফিরেছে রিয়াজ। এরপরই দুই মহিলা পুলিশ কর্মী সহ পাঁচজন পুলিশের দল রিয়াজকে ধরার জন্য কাশ্মীরে যায়। রিয়াজকে ধরতে পারাটা বড় সাফল্য বলে দাবি করছে পুলিশ। যদিও অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী কৌশিক সিনহা বলেন, ‘‘আমার মক্কেলকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই যুবক ফেরার থাকায় তাকে ধরা যাচ্ছিল না। মোবইল ফোনের লোকেশন ট্যাক করেও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারা যায়, নিজের গ্রামেই রয়েছে রিয়াজ। এরপর কাশ্মীরে যায় ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার এসআই জ্যোতি সাউএর নেতৃত্বে ৫ পুলিশের দল। অনন্তনাগ জেলা পুলিশ ও মাট্টন থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে।’’