স্বপ্নীল মজুমদার~ লোকসভা ভোট মিটতেই ঝাড়গ্রাম (Jhargram) শহরে ডেঙ্গি বিজয় অভিযান শুরু করল ঝাড়গ্রাম পুরসভা। সোমবার ১০ জুন থেকে শুরু হয়েছে ওই কর্মসূচি। ঝাড়গাম পৌরসভার এই কর্মসূচি চলবে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। সূত্রের খবর, চলতি বছরের মার্চে ঝাড়গ্রাম শহরে এক ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল।
তারপর অবশ্য সরকারি ভাবে ঝাড়গ্রাম শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও খবর নেই। তবে সোমবার থেকেই ঝাড়গ্রাম পুর এলাকায় পুরসভার উদ্যোগে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম শহরের প্রতিটি বাড়িতে প্রতি মাসে দু’বার করে যাবেন সমীক্ষক-দলের সদস্যরা। শহরবাসীর বাড়িতে গিয়ে তাঁরা জানতে চাইছেন, পরিবারের কোনও সদস্যের জ্বর, বমিবমি ভাব, মাথা ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, পেট খারাপের মত উপসর্গ রয়েছে কি-না?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ব সহায়ক দলের মহিলা আরোগ্য সমিতির ১৬৮ জনকে নিয়ে তৈরি হয়েছে সমীক্ষক দল।
সমীক্ষক দলের সদস্যরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি, জল জমিয়ে যাতে না রাখা হয়, কি কি কারণে মশার বংশবৃদ্ধি হয় এসব বিষয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করছেন। পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার তথ্য ‘ভেক্টর কন্ট্রোল অ্যাপ’-এ (আশ্বাস অ্যাপ) আপলোড করা হচ্ছে। এছাড়াও তিন ধরনের মশা নাশক স্প্রে করা হচ্ছে। এজন্য ১৮টি ওয়ার্ডে ৩৬ জন অস্থায়ী কর্মীকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অবরুদ্ধ নিকাশি ও ঝোপঝাড় সাফাইয়ের জন্য ১০৮ জন কর্মীকে মাঠে নামানো হচ্ছে।
এক সমীক্ষা কর্মী বলছেন, ‘‘বহুতলের বাসিন্দাদের মধ্যেও সচেতনতার অভাব রয়েছে। রেফ্রিজারেটরের ওয়াটার ট্রে নিয়মিত পরিষ্কার করেন না অধিকাংশ পরিবার। অথচ সেখানেও মশার বংশবিস্তারের সুযোগ রয়েছে। রেফ্রিজারেটরের পিছনে ওয়াটার ট্রে-র জল কয়েকদিন অন্তর ফেলে দেওয়ার কথাও আমরা বলছি। বাড়ির ছাদে খালি টব অথবা খালি পাত্র ফেলে রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির জল জমে সেখানেও মশার আঁতুড় ঘর তৈরি হয়ে যায়। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের বিষয়গুলি বোঝানো হচ্ছে।’’ মূলত, পরিষ্কার জলে স্ত্রী এডিস মশা ডিম পাড়ে। তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সেই ডিম থেকে লার্ভা হয়। এবং সাত থেকে দশ দিনে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়।সেই কারণে পুরসভার স্লোগান, ‘‘সাতদিনে একদিন, জমা জল পেলে দিন!’’
পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ বলছেন, ‘‘মশা বাহিত রোগ ঠেকাতে ছ’মাসের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সমীক্ষক দলের সদস্যের সঙ্গে পুরবাসীকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হচ্ছে। যে-যে কারণে মশার উপদ্রব বাড়ে সে বিষয়ে পুরবাসীকে সচেতনও করা হচ্ছে।’’