স্বপ্নীল মজুমদার: ধর্মশিক্ষার নামে মাদক খাইয়ে ১৬ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে অন্তসত্ত্বা করার দায়ে স্বঘোষিত গুরুদেবকে ২২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম (Jhargram) পকসো আদালত। বুধবার পকসো আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত বছর একান্নোর বাসুদেব পাতরকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ছ’মাস কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ঝাড়গ্রামের(Jhargram) বাসিন্দা বাসুদেবের কীর্তনের দল ছিল। মাঝে মধ্যেই এলাকার লোকজনকে ধর্মশিক্ষা দিতেন তিনি। স্কুল পড়ুয়া নাবালিকাটিও বাসুদেবের বাড়িতে ধর্মশিক্ষার পাঠ নিতে যেত। অভিযোগ, মাদক খাইয়ে নাবালিকাকে আচ্ছন্ন করে ধর্ষণ করত বাসুদেব। নাবালিকা অন্তসত্তা হতে পরিবারের নজরে আসে বিষয়টি। বাসুদেব দাবি করে নাবালিকার পেটে টিউমার হয়েছে। এরপর নাবালিকাকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Jhargram Medical Collage Hospital) নিয়ে যায় সে। পরীক্ষার পর ধরা পড়ে নাবালিকা ন’মাসের অন্তসত্ত্বা। গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর নাবালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুত্রসন্তান প্রসব করে নাবালিকা।
আরও পড়ুনঃ বিরূপাক্ষের বদলি! বর্ধমান থেকে সোজা কাকদ্বীপ
অসুস্থতার জন্য দিন সাতেক চিকিৎসাধীন থাকে নাবালিকা। এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় বাসুদেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে সেদিনই বাসুদেবকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পকসো আইনের ৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করায় পুলিশ। পুলিশ প্রথম দফায় গত বছর ২৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বিচারের জন্য আদালত চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চার্জগঠন করে। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ইতিমধ্যে অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষায় পিতৃত্বের প্রমাণ মেলে। এরপর ৮ জুলাই পুলিশ অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে দাখিল হয়। তদন্তকারী অফিসার প্রতিভা হালদার সহ ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মঙ্গলবার বাসুদেবকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। বুধবার সাজা ঘোষণা হয়।