নিসর্গ নির্যাস মাহাতো:
চুয়াড় বিদ্রোহ বললেই উঠে আসে রানি শিরোমণি, কর্ণগড়ের নাম। এই অঞ্চলের জমিদারি সামলাতেন রানি শিরোমণি। রাজা অজিত সিংহের দ্বিতীয় স্ত্রী তিনি। পুত্রবধূ ছিলেন রাজা যশোবন্ত সিংহের। রাজপরিবারের মন্দির বললেই উঠে আসে দেবী মহামায়ার নাম। তবে ওড়িশা যোগ থাকায় এককালে নাকি মূল মন্দির ছিল জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার। মন্দির নেই তবে সেই বিগ্রহ আজও আছে ‘ক্ষয়প্রাপ্ত’ অবস্থায়। হয় না রথযাত্রা(Ratha Yatra)।
রানি শিরোমণি গড়ের সামনেই ছিল সেই জগন্নাথ মন্দির। উদাসীনতায় তা ভাঙতে ভাঙতে ‘লোপ’ পেয়েছে। টিকে আছে সামান্য জরাজীর্ণ স্তম্ভ। এমনভাবে লতাপাতায় ঢেকে আছে, যা সহজে খালি চোখে দেখা যায় না।
আরও পড়ুনঃ মাওবাদী অধ্যুষিত গ্রামে জগন্নাথদেবের আরাধনা, নেপথ্যে ৩ বছরের খুদে
প্রাচীন ওই ৩ বিগ্রহ আছে কর্ণগড়ের ‘পণ্ডা’ পরিবারে। রাজপরিবারের মন্দিরে নিযুক্ত হওয়ার আগে ওই বংশের পূর্ব পুরুষ তথা পুরোহিতের আসল পদবী ছিল ‘চক্রবর্তী’। পরে তিনি উপাধি পান ‘পণ্ডা’। সেই উপাধিই এখন বংশপরম্পরায় পদবী, পরিবার সূত্রে দাবি এমনটাই।
উল্লেখ্য, মন্দিরে প্রাচীন এই বিগ্রহের পুজো করতেন অন্নদাচরণ পণ্ডা। আগে গড়ের সামনেই ছিল তাঁদের বাড়ি। পরবর্তীকালে ডাকাতের ভয়ে পুরোহিতের পরিবার চলে আসেন মহাময়া মন্দিরের কাছে। এখন সেখানেই বাসস্থান পুরোহিতের বংশধরদের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জরাজীর্ণ মন্দির থেকে বাড়িতে বিগ্রহ নিয়ে এসেছিলেন গোপাল পণ্ডা। এখনও বাড়িতে আছে সেই ‘জরাজীর্ণ’ বিগ্রহ। পুজো হয় বাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা নতুন বিগ্রহে। হয় নিত্যপুজো। তবে রথযাত্রা হয় না। প্রাচীন মূর্তি আছে বন্ধ ঘরে। স্থান হয়নি মিউজিয়ামেও। দাবি উঠছে, ওই মূর্তিগুলি সংরক্ষণের।