Durga Puja of Amadpur: দুর্গাপুজোয় অন্যতম ঐতিহ্যের মিশেল আমাদের গ্রাম বাংলার বনেদী বাড়ির বিভিন্ন পুজো (Banedi Barir Durga Puja)। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে থাকে পুজোগুলির শতাব্দী প্রাচীন নিজস্ব রীতিনীতি। তেমনই এক সুপরিচিত পুজো বর্ধমানের (Burdwan Durga Puja) আমাদপুর চৌধুরী বাড়ির (Amadpur Choudhury Barir Durga Puja) প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো দুর্গাপুজো। মহালয়ার সাত দিন আগেই মা দুর্গার বোধন হয় আমাদপুরের চৌধুরি বাড়িতে। আবার দেবী সরস্বতী ও লক্ষ্মীর থাকে না বাহন।
শোনা যায়, রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন দোহী সেনশর্মা। যিনি আবার কবি জয়দেবের সহকর্মী ছিলেন। মোঘলদের কাছ থেকে চৌধুরী উপাধি ও মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আমলে মুর্শিদাবাদে জমিদারি পান অনাদিরাম। বর্গি হামলার জেরে বর্ধমানের জেলার মেমারির আমাদপুর গ্রামে চলে আসেন অনাদিরামের বংশধর চন্দ্রশেখর চৌধুরী। তিনি সেখানে তৈরি করেন জমিদার বাড়ি। প্রতিষ্ঠা করেন কুলদেবতাকে। চন্দ্রশেখর চৌধুরী কুলদেবতার মন্দিরের পাশেই দুর্গা মণ্ডপ তৈরি ৩৬০ বছর আগে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। ঐতিহ্য মেনে আজও হয়ে আসছে সেই পুজো।
মহালয়ার সাত দিন আগে মা দুর্গার বোধন হয় এখানে। পুজোয় অংশ নেন গ্রামের সমস্ত মানুষ। প্রাচীন রীতি মেনে গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল সংগ্রহ করেন চৌধুরী বাড়ির মহিলারা। সেই চাল ভিজিয়ে বেটে আলপনা দেওয়া হয়। মায়ের পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। চৌধুরী পরিবারের বিশ্বাস মতে ঘরে যাতে লক্ষ্মী ও সরস্বতী অচলা থাকেন, তাই তাঁদের বাহন থাকে না। সপ্তমীর দিন দুর্গা দালানের পাশে লক্ষ্মীর ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। বছরের শুরুতে তুলে রাখা ধান বসানো হয়। অষ্টমীতে মহা নৈবেদ্য দেওয়া হয়। নবমীতে হয় চাল কুমড়ো ও আখ বলি। দশমিতে নারায়ণ সেবা, বলেন বস্ত্র বিতরণ। দশমীতে তোলা হয় লক্ষ্মীর ঘট। পুজো উপলক্ষ্যে চৌধুরী বাড়ির বর্তমান প্রজন্মরা আসেন পৈত্রিক ভিটেয়। পুজোর শুরুর ১৫ দিন আগেই আমাদপুরের চৌধুরী বাড়িতে শুরু হয় দেবী বন্দনা।