রাজীব ঘোষ: বহুদিনের পুরনো স্কুল(School)। এলাকার বহু বাসিন্দারাই এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন। তবে স্কুলটি এখনো আছে। কিন্তু স্কুল ঘরে পড়াশোনা করার মত পরিস্থিতি নেই। প্রায় প্রতিদিনই স্কুল হয়। কিন্তু পঠন-পাঠন হয় কাছেই একটি মন্দিরে(Temple)। কারণটা কি? খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, বিদ্যালয়ের অবস্থা এতটাই খারাপ, যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। স্কুল বাড়ির প্রায় ভগ্নদশা। ছাদ, দেওয়াল থেকে চাঙড় খসে খসে পড়ছে। এরকম একটা ভগ্নপ্রায় ঘরে কচিকাঁচাদের নিয়ে পঠন-পাঠন করা একেবারেই নিরাপদ নয়। আর তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছোট ছোট শিশুদের পাশের মন্দিরে নিয়ে গিয়ে ক্লাস নেন।
ঘটনাটি কেশপুরের(Keshpur) গোলার গ্রাম পঞ্চায়েতের পালংপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এই স্কুলটিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। মোট ছয়টি ক্লাসে খাতায়-কলমে ৭১ জন ছাত্র-ছাত্রী বর্তমানে আছে। স্কুলটি প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো। ৩ জন মাত্র শিক্ষক। তবে মন্দিরে স্কুলের ক্লাস নেওয়ার ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার একেবারেই কম। মন্দিরে কোনো পুজো থাকলে সেদিন স্কুল বন্ধ থাকে। আবার বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান একটা সময় এই স্কুল একেবারে গমগম করত। ধীরে ধীরে বহু অভিভাবক এই পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য স্কুলে তার সন্তানদের পাঠিয়েছেন। একেবারে জীর্ণ দশা তৈরি হয়েছে স্কুলটির।স্কুলের ছাত্রের এক অভিভাবক এই প্রসঙ্গে বলেন, মন্দিরে কি আর পড়াশোনা হয়? হই হট্টগোল হয়। টিউশনে গিয়েই পড়ে। ওই পরীক্ষার সময় এসে পরীক্ষা দিয়ে যায়। স্কুলের এই জীর্ণ দশা প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীম মাইতি বলেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে আবেদন করা হয়েছে। বিধায়ক শিউলি সাহার কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু স্কুলটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
গত শুক্রবার কেশপুরের অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় এক দম্পতি মারা গিয়েছেন। তার কন্যা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী এই স্কুলেই পড়ে। কেশপুরের বিডিও তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তখন স্কুলটি পরিদর্শন করে জানান, জেলায় আবেদন করা হবে। স্কুলের এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জেলাশাসক জানিয়েছেন, মন্দিরে স্কুলের ক্লাস হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। যত শীঘ্র সম্ভব স্কুলটির সংস্কার করা হবে।