Midnapore: ৩৪ নতুন দৈত্যাকার ছায়াপথের খোঁজ পেলেন বাঙালি জ্যোতির্বিজ্ঞানী দল

Published On:
লেটেস্ট আপডেট সবার আগে Join Now

বাঙালি জ্যোতির্বিজ্ঞানী(Bengali astronomer) দল খোঁজ পেলেন ৩৪টি নতুন দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সির। তবে আকাশ গঙ্গা ছায়াপথের চেয়ে এই ছায়াপথগুলি অনেকটাই আলাদা। অপটিক্যাল টেলিস্কোপে তা সম্বন্ধে তেমন ধারণা পাওয়া যায় না। ধারণা পেতে প্রয়োজন বেতার তরঙ্গ সাহায্যের। নেতৃত্বে ছিলেন মেদিনীপুর(Midnapore) সিটি কলেজের পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সব্যসাচী পাল। এই গবেষণাদলে আছেন নিতাই ভুক্তা, সৌভিক মানিক, সুশান্ত কুমার মণ্ডল।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সুপ্রাচীন এই রেডিও গ্যালাক্সি গুলি সাধারণ গ্যালাক্সির তুলনায় বহুগুণ বড় হয়। জানা গিয়েছে, মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য পুনে থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তরে খোদাদ গ্রামের কাছে ৪৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট ৩০টি রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়েছিল। জায়ান্ট মিটার রেডিও টেলিস্কোপগুলি নির্মিত ও পরিচালিত হচ্ছে টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর রেডিও এস্ট্র ফিজিক্স দ্বারা। জানা গিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জিএমআরটি ব্যবহার করে ১৫০ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গে প্রায় ৯০ শতাংশ আকাশের রেডিও স্কাই ম্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। যা পরিচিত টিআইএফআর জিএমআরটি স্কাই সার্ভে নামে।

আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন দেরিতে চলছে লোকাল ট্রেন, ট্রেন যন্ত্রণা থেকে মেদিনীপুরের মুক্তি কবে?

সব্যসাচী বাবুর কথায়, এই দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সিগুলি বিস্তৃত কয়েক লক্ষ আলোকবর্ষ ব্যাপী। যা পরপর প্রায় ২০-২৫টি সারিবদ্ধ আকাশগঙ্গা ছায়াপথের সমতুল্য। তিনি বলেন, জিআরএসগুলির কেন্দ্রস্থলে আছে একটি দানবীয় ব্ল্যাক হোল। যার ভর সাধারণত সূর্যের ১০ মিলিয়ন থেকে ১ বিলিয়ন গুণ। রেডিও গ্যালাক্সির সেন্ট্রাল ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে এই ব্ল্যাক হোল। তা পার্শ্ববর্তী পদার্থসমূহকে তীব্র আকর্ষণে টেনে নেয়। আয়নিত করে ও তৈরি করে একটি শক্তিশালী ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বল। ওই বল পদার্থগুলিকে ব্ল্যাক হোলের ঘূর্ণন অক্ষ বরাবর দ্রুতগতিতে বাইরের দিকে ঠেলে দেয়। হট চুম্বকীয় প্লাজমার এই জেট গ্যালাক্সির দৃশ্যমান আকার ছাড়িয়ে গ্যালাক্সির দুই প্রান্তে বহু লক্ষ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

ইন্টারগ্যালাক্টিক মিডিয়ামের যেখানে এই জেট ধাক্কা খায় সেখানে তৈরি হয় একটি বিশাল রেডিও নির্গমন লোব। গবেষকদল বলেন, এই ধরণের জিআরএস চিহ্নিত করা খুব চ্যালেঞ্জিং কারণ দু’টি লোবের সংযোগকারী সেতুটি প্রায়শয়ই দৃশ্যমান হয় না। কম রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে জিএমআরটি’র হাই সেনসেটিভিটির জন্য এগুলি দেখতে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মতে, জিআরএসগুলি বিশাল আকার হওয়ার জন্য রেডিও গ্যালাক্সি বিবর্তনে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করে। গবেষকগণ আরও বলেন, ব্যতিক্রমী ভাবে বড় আকারের জিআরএসের ক্ষেত্রে ইন্টার গ্যালাক্টিক মিডিয়ামের পরিবেশ একাই প্রধান ভূমিকা পালন করে না। যেমন তাদের খোঁজ দেওয়া দুটি রেডিও গ্যালাক্সি (জে জিরো এইট ফোর থ্রি + জিরো ফাইভ ওয়ান থ্রি এবং জে ওয়ান ওয়ান থ্রি এইট + ফোর ফাইভ ফোর জিরো) সাধারণ বোঝাপড়াকে চ্যালেঞ্জ করে বেশি ঘণত্বের পরিবেশেও দৈত্যাকার ধারণ করেছে।

জানা গিয়েছে, এই আবিষ্কারটি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিকাল সোসাইটির অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল সাপ্লিমেন্ট সিরিজে প্রকাশিত হয়েছে। রেডিও গ্যালাক্সির বিবর্তন, গ্যালাকটিক ডাইনামিক্স এবং ইন্টার গ্যালাক্টিক মিডিয়াম সম্বন্ধে সম্মুখ ধারণা পাওয়ার জন্য এই ধরনের গবেষণা আদর্শ বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।