রাজীব ঘোষ: রাজ্য জুড়ে ফুটপাত পরিষ্কার করতে চলছে বুলডোজার। বিকল্প কোনো পরিকল্পনা না করেই হকার উচ্ছেদে চালিয়ে দিচ্ছে বুলডোজার বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল গুলি। বাংলা জুড়ে কাজের অভাব প্রকট। বেকার মানুষেরা রাস্তার ধারে, ফুটপাতে কোনো না কোনো জায়গায় যেকোনো সামগ্রী নিয়ে বসে বিক্রি করে পেট চালানোর চেষ্টা করছেন। একজন বয়স্ক চা দোকানদার বিডিও অফিসের কাছে শুধুমাত্র চা-বিস্কুট বিক্রি করে তার বকেয়া পাওনা টাকার পরিমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪০০০ টাকা। আর সেই টাকা বারে বারে চাইতে গেলেও ব্লক প্রশাসনের তরফে টাকা তো দেওয়া হচ্ছেই না, উল্টে তার দোকানের কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন চা দোকানদার। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরে(Purba Medinipur)।
আরও পড়ুনঃ ডাউন হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ স্করপিওর, রেলগেট বন্ধে দেরি হওয়াতেই বিপত্তি?
ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল ব্লক অফিসের। গত কয়েক মাস ধরে মহিষাদল বিডিও অফিস বা পঞ্চায়েত সমিতির অনুমোদিত ক্যান্টিনের কর্মী অসুস্থ থাকার কারণে অফিসের কিছুটা দূরেই অবস্থিত হিজলি টাইডাল ক্যানেল এর ধারে নন্দ মাইতি নামে এক বয়স্ক চা ব্যবসায়ীর দোকান থেকে নিয়মিত চা, বিস্কুট, মশলামুড়িসহ বিভিন্ন খাবার বিডিও অফিসে অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছিল। বেশ কয়েক মাস ব্লক প্রশাসনের অর্ডার মতো সামগ্রী দেওয়ার পরে ওই গরিব চা দোকানদারের বিল হয়ে যায় প্রায় ১৪০০০ টাকা।এই ঘটনাটি একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
স্বাভাবিকভাবেই তিনি মহিষাদল বিডিও অফিসে ওই বকেয়া টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। এবার তারপরেই ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই ব্যবসায়ীকে টাকা দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে তার দোকানের কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। হিজলি টাইডাল ক্যানালের ধারে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ওইভাবেই সরকারি জায়গার ধারে দীর্ঘদিন ধরে দোকান করে নিজেদের পেটের রুটি রুজির ব্যবস্থা করছেন। গরিব বয়স্ক চা দোকানদার নন্দ মাইতি এরপরেই ভীত হয়ে পড়েন। কারণ তার রোজগারের একমাত্র মাধ্যমই চায়ের দোকান। তিনি কখনো ভাবতেও পারেননি, বিডিও অফিসে তার দোকান থেকে চা বিস্কুট মশলা মুড়িসহ বিভিন্ন খাবার দেওয়ার পর বকেয়া টাকা চাইতে গেলে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে বলে।
এই প্রসঙ্গে মহিষাদল এর বিডিও বরুনাশিস সরকার জানান, ঘটনাটি জানা নেই। এটি আমার আসার আগের ঘটনা হতে পারে। তবে তিনি যে টাকা দাবি করছেন, সেটা সঠিক কিনা তা হিসাব করে দেখতে হবে। আর সরকারি জায়গায় দোকান থাকায় তার উপযুক্ত কি কাগজপত্র আছে, তা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এটা সরকারের পদক্ষেপ। ফলে তার বকেয়া টাকা না দেওয়ার সঙ্গে দোকানের কাগজ চেয়ে পাঠানোর কোনো সম্পর্ক নেই। এরপরেই প্রৌঢ় ব্যবসায়ী নন্দ মাইতি মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাসের কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেছেন, ঘটনাটি জেনে নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।