Midnapore: শিশু অধিকার নিয়ে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার জন্য সাংবাদিক সুকুমার মাহাতো ভূষিত হলেন ‘শিশুশ্রী’ পুরস্কারে (Shishushree Prize)। তাঁকে পুরস্কৃত করেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। বৃহস্পতিবার কলকাতার রবীন্দ্রসদনে শিশু সুরক্ষা কমিশন ও রাজ্য সরকারের শিশু ও নারী সুরক্ষা দপ্তর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালন করে। ৮ টি বিভাগে মোট ন’জন সাংবাদিককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস, প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অশোকেন্দু সেনগুপ্ত সহ উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী, সুদেষ্ণা রায় প্রমুখরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০২০ সালেও ‘শিশুশ্রী’ সম্মান পেয়েছিলেন সাংবাদিক সুকুমার মাহাতো (Sukumar Mahato)।
সাংবাদিক সুকুমারবাবুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে অবিভক্ত মেদিনীপুরে। ১৯৭৭ সালে তাঁর জন্ম মেদিনীপুর সদর থেকে ৮৫ কিমি দূরে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বেলপাহাড়ির খড়পাল গ্রামে। বরাবর ক্লাসে প্রথম হওয়া ছাত্রের আগ্রহ ছিল বসে আঁকো, ডিবেট, সায়েন্স সেমিনার থেকে ক্যুইজ সর্বত্র। কৈশোরের শুরুতেই আগ্রহী হন সাংবাদিকতায়। ১৯৯২ সালে একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুকুমারের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় দৈনিক ওভারল্যান্ডের কিশোরদের পাতায়। সাংবাদিকতার হাতেখড়ি ১৯৯৪ সালে ‘দৈনিক বিপ্লবী মেদিনীপুর টাইমসে’র হাত ধরে। তারপর মেদিনীপুরের চারটি স্থানীয় দৈনিক এবং কলকাতার একাধিক সাপ্তাহিকের যাত্রা শেষে ২০০৪ সালে তিনি ‘বর্তমান’ পত্রিকায় যোগ দেন। পরের বছর যোগ দেন ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’য়।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলির মধ্যে অন্যতম ২০০৫ সালে বেনফেড দুর্নীতি নিয়ে বর্তমান পত্রিকায় প্রতিবেদন। ঘটনার তদন্তে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট সহ ছ’জনের বদলি হয়। রাজ্য রাজনীতির টালমাটাল সময়ে সমস্ত সংবাদমাধ্যমে মাওবাদী নেতা কিষাণজীর মৃত্যু সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় ২০১০ সালে ৮ মার্চ ও ২ এপ্রিল তাঁর নেওয়া কিষাণজীর এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়। চ্যানেল টেনে ২০১০ সালের আগস্টে লালবাগ আদালত থেকে কোর্ট রেকর্ড হারিয়ে যাওয়ার ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তির বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সুকুমারবাবু।
সাংবাদিকতার জন্য একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সুকুমার মাহাতো। ২০২০ সালে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফে শিশু অধিকার নিয়ে ইংরেজি কাগজে সেরা প্রতিবেদনের জন্য ‘শিশুশ্রী পুরস্কার’ পান। সেই বছরেই ফরাক্কা থানার নিবিড় জনসংযোগে অপরাধ কমানো নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ‘স্ক্রাইব ট্রাইব ২.০’ পুরস্কারে ভূষিত হন। চলতি বছর একই সঙ্গে ইউনিসেফ ও কলকাতা প্রেসক্লাবের বিচারে সাংবাদিকতার উৎকর্ষতা পুরস্কার এবং পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফে দ্বিতীয় বার ‘শিশুশ্রী পুরস্কারে’ ভূষিত হলেন তিনি। নিজের পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়ে শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলি স্মরণ করেছেন সুকুমারবাবু। সেই সঙ্গে ভালো শিক্ষকদের শিক্ষার অবদান ও কয়েকজন দাদার মতো সাংবাদিকের সস্নেহ সাহচর্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।