বিক্রম ব্যানার্জী: সম্প্রতি ইউক্রেনকে(Ukraine) আমেরিকার(America) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার(Russia) অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অনুমোদন দিয়েছেন বর্তমান আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার 2 মাস আগে বাইডেনের নেওয়া এই বিরাট সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে। কেননা, ইতিমধ্যেই আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে(Ukraine) সতর্ক করেছে রাশিয়া(Russia)। রাশিয়ার(Russia) তরফে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন(Ukraine) যদি আমেরিকার(America) দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার(Russia) ভূখণ্ডে আঘাত হানে, তবে তার পাল্টা জবাব ইউক্রেন(Ukraine) ও দেশটির মিত্রদের জন্য কঠিন হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: একটি পাকা কলার দাম প্রায় সাড়ে 8 কোটি টাকা, কিনবেন নাকি?
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনকে সাহায্য করতে গিয়ে রাশিয়ার ক্ষতি করলে তা আমেরিকা ও মিত্রশক্তিদের একপ্রকার সরাসরি রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়ানোর শামিল হবে। সূত্র বলছে, রাশিয়াকে প্রতিহত করতে ইতিমধ্যেই ইউক্রেনকে এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে আমেরিকা। যা প্রায় 300 কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। সেই সাথে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের স্ট্রম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে ইউক্রেনের। কাজেই রাশিয়াকে প্রতিহত করতে আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলি ইউক্রেনের পাশে যে একপ্রকার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে একথা বলাই যায়।
যদিও মিত্রদের কাছ থেকে পাওয়া দূরপাল্লার ক্ষমতাশালী মিসাইল রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিশেধাজ্ঞা পেয়েছিল ইউক্রেন। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক হাজার তম দিন হিসেবে মঙ্গলবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেন বাইডেন। ধারণা করা হচ্ছে, দুই পক্ষের যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বর্তমান আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। আর সেই সূত্র ধরেই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, নতুন অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা তার তরফে নাও আসতে পারে। তবে ক্ষেপণাস্ত্র তার নিজের ভাষায় কথা বলবে।
ধারণা করা হচ্ছে আমেরিকার সর্বশেষ অনুমতি পেলে ইউক্রেন স্পর্শকাতর অঞ্চল কুরস্কে প্রথম এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করবে। তবে বেশ কিছু সূত্র মারফত খবর, আমেরিকা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চল কুরস্ক সীমানায় তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখার শর্ত দিয়েছে। ফলত, ইউক্রেনের পক্ষে আমেরিকার প্রত্যেকটি ধাপ পুতিনকে একপ্রকার মার্কিন ক্ষমতার আভাস দিচ্ছে। মার্কিন ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালক জন ফাইনার জানান, রাশিয়াকে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতিতে আমেরিকা প্রতিক্রিয়া জানাবে। এদিকে সোমবার পুতিনের মুখপাত্র বলেছেন, আমেরিকা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘর্ষে একপ্রকার আগুনে ঘি ঢালার কাজ করছে।
কাজেই আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নয়া সিদ্ধান্তের পরই ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘর্ষে নতুন পালক জুড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যদিও আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের যুদ্ধ বিরতির ওপর বারংবার জোর দিয়েছেন। তার মতে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলা যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়া দরকার। তবে কোন উপায়ে ও কীভাবে সেই সংঘাত থামানো যাবে তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট বক্তব্য মেলেনি রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের তরফে।