বিক্রম ব্যানার্জী: রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্বের ভিত মজবুত করতে প্রথমবারের মতো সামরিক নৌ-মহড়ায়(Naval Exercise) অংশ নিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইন্দোনেশিয় শহর সুরাবায়াক লাগোয়া জাভা সমুদ্রে। চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি সম্পর্কে নিজেদের ক্ষমতা জানান দিতে ইতিমধ্যেই জাভায় পৌঁছেছে রাশিয়ার 3টি করভেট ক্লাসের যুদ্ধ জাহাজ, একটি হেলিকপ্টার, একটি মাঝারি ট্যাঙ্কার ও একটি টাকবোট।
আরও পড়ুন: ফের চোটের কাছে পরাস্ত নেইমার, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়লেন ফুটবল তারকা
হঠাৎ কেন রাশিয়ার সাথে নৌ-মহড়ায় অংশ নিতে মরিয়া হয়ে উঠল ইন্দোনেশিয়া? এমন প্রশ্ন বর্তমানে অহরহ। সূত্রের খবর, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ানতো পুতিনের সাথে সু সম্পর্ক তৈরি করার লক্ষ্যে এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। অতীতে ফিরে দেখলে জানা যাবে, 2014 সালে ক্রাইমিয়া দখলের পর 2019-এ ইউক্রেন অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে জাকার্তার সাথে মস্কোর বাণিজ্যিক সম্পর্কের তুমুল অবনতি হয়েছিল।
কাজেই সেই দুঃসময় কাটিয়ে নতুনভাবে শক্তিধর দেশ রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সুবিয়ানতো। যদিও এই কাজের জন্য বহুবার আমেরিকার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। এছাড়াও রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করে মার্কিন সামরিক বাহিনীর চোখ রাঙানিও দেখেছে ইন্দোনেশিয়া। যদিও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া প্রথম থেকেই নিরপেক্ষ অবস্থানে। তবে চলতি রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার যৌথ মহড়া সেই অবস্থানে থাবা বসিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে ইন্দোনেশিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে।
যদিও ইন্দোনেশিয়া নৌবাহিনীর কমান্ডার জানিয়েছেন, রাশিয়ার সাথে এই যৌথ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য শুধুমাত্র দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করা। অন্যদিকে রাশিয়ার বক্তব্য, এই মহড়ার ফলে দুই দেশের নৌ বাহিনীর মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হবে। তবে ইন্দোনেশিয়ার নয়া পদক্ষেপ নিয়ে এশিয়া প্যাসিফিক দফতরের প্রধান জর্জ ম্যাথেস বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া তার কূটনৈতিক অবস্থানে অনড়। রাশিয়ার সাথে যৌথ মহড়াকে রীতি হিসেবেই দেখছেন তিনি।’ এ বিষয়ে ম্যাথেসের সংযোজন, ‘এর আগে জার্মানি এবং পরবর্তীতে 2006 সালে আমেরিকার সাথেও নৌ-মহড়ায় অংশ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। ফলত রাশিয়ার সাথে যৌথ মহড়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখার কিছু নেই।’