রাজ্যের বন্যাদুর্গতদের (Bengal Flood) জন্য ডিভিসি (DVC) রাজ্যের বন্যা ত্রাণ তহবিলে কর্মচারীদের এক দিনের বেতন দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ডিভিসি-র সেই সাহায্য প্রত্যাখ্যান করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার (West Bengal Government)। রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ডিভিসির তরফে কোনও রকম দান গ্রহণ করবে না রাজ্য সরকার৷ তবে ব্যক্তিগত ভাবে ডিভিসির কর্মচারীরা সাহায্য করলে তা গ্রহণ করা হবে।
টানা বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি। বুধবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ডিভিসি জানায়, সংস্থার যে সব কর্মীরা আয়করের আওতায় রয়েছেন তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন থেকে এক দিনের বেতন স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাটা যাবে। সেই সংগৃহীত অর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে দান করা হবে। বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন ডিভিসি-র কোনও রকম দান রাজ্য সরকার গ্রহণ করবে না। তবে যদি ডিভিসির কোনও কর্মচারী ব্যক্তিগত ভাবে বন্যাদুর্গতদের জন্য দান করতে চান, সেই দান গৃহীত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ডিভিসির কাছ থেকে কোনও সাহায্য আমরা নেব না। ডিভিসিতে আমাদের ইউনিয়ন আছে। ডিভিসির কর্মচারীদের বেতন কাটতে দেবে না। বন্যা তো হয়েই গিয়েছে। মানুষ তো জলের তলায়। এখন টাকা দিয়ে কী হবে?’’ শোভনদেব আরও বলেছেন, ‘‘১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিভিসি মোট ৮ লক্ষ ২৭ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হল, জল ছাড়ার আগে মাত্র তিন ঘণ্টা সময় তারা দিয়েছে। তা-ও মধ্যরাতে। মানুষ তখন ঘুমোয়। ওই অবস্থায় উদ্ধারকার্য সম্ভব নয়।”
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, দক্ষিণবঙ্গে বন্যার কারণে এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ডিভিসিকে দায়ী করেছেন। অভিযোগ করেছেন, রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দু’বার চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার। তারপরেই ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কমিটি রয়েছে, সেই কমিটি থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা পদত্যাগ করেছেন। এবার ত্রাণ তহবিলে ডিভিসি-র সাহায্যও প্রত্যাখ্যান করা হল।