বেঙ্গালুরুর মহালক্ষ্মী হত্যা (Bengaluru Death Case) মামলার প্রধান অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছে। বুধবার বিকেলে ওড়িশার ভদ্রক জেলার একটি গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর। গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর লাশ পাওয়া গিয়েছে এদিন। সেখানেই তাঁর বাইকটিও পার্ক করা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মুক্তিরঞ্জন রায়। তাঁর কাছ থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে সে মহালক্ষ্মীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, 20 সেপ্টেম্বর, বেঙ্গালুরুর ভ্যালিকাভাল এলাকায় বাসাপ্পা গার্ডেনের কাছে একটি তিনতলা বাড়িতে 29 বছর বয়সী মহালক্ষ্মীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাঁর দেহকে 59 টুকরো করে রেফ্রিজারেটরে রাখা হয়েছিল বলে খবর মিলেছে। কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরাও বলেছিলেন যে সন্দেহভাজন হয়ত ওড়িশায় থাকতে পারেন। তাই-ই সত্য হল।
মহালক্ষ্মী স্বামীকে ছেড়ে 4 বছর ধরে একা থাকেন
মহালক্ষ্মীর ভাই উক্কাম সিং দৈনিক ভাস্করকে বলেছিলেন যে তাঁর পরিবার নেপালের কাথান্ড রাজ্যের টিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা। 30 বছর আগে বাবা-মা কাজের জন্য বেঙ্গালুরু এসেছিলেন এবং এখানে থেকে যান। মহালক্ষ্মীর বিয়ে হয়েছিল নেলামঙ্গলায় বসবাসকারী হেমন্ত দাসের সঙ্গে। হেমন্ত একটি মোবাইল এক্সেসরিজের দোকানে কাজ করেন। আর একটি মলে কাজ করতেন মহালক্ষ্মী। তাঁদের একটি ৪ বছরের মেয়েও রয়েছে। মহালক্ষ্মী ও হেমন্ত প্রায় ৪ বছর ধরে আলাদা থাকছিলেন।
আরও পড়ুনঃ উলুবেড়িয়ায় বোমা বিস্ফোরণ, তদন্তের দাবি দিলীপ ঘোষের
যদিও দুজনেরই এখনও ডিভোর্স হয়নি। মেয়েটি হেমন্তের সঙ্গে থাকতেন। মহালক্ষ্মী 2023 সালের অক্টোবর থেকে বাসপ্পা গার্ডেনের কাছে 5 তম ক্রস পাইপলাইন রোডে,র ভ্যালিকাভালে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। মহালক্ষ্মী এবং রঞ্জন 2023 সাল থেকে একে অপরকে চিনতেন। সম্পর্কেও ছিলেন। দুজনেই একই মলে কাজ করতেন।
মহালক্ষ্মীর হত্যার ঘটনা সামনে আসে, যখন তাঁর বাড়িতে বসবাসকারী জীবন প্রকাশ তীব্র গন্ধ পান। মহালক্ষ্মী যে বাড়িতে থাকতেন তাঁর উপরের তলা থেকে গন্ধ আসছিল। এরপর জীবন যখন মহালক্ষ্মীর দরজার কাছে যান, দুর্গন্ধ এতই বেড়ে গিয়েছিল যে সেখানে দাঁড়ানোও যাচ্ছিল না। আর দরজাও বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। জীবন তৎক্ষণাৎ মহালক্ষ্মীর ভাই উক্কাম সিং ও বোনকে ডাকেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মহালক্ষ্মীর পরিবার বাড়িতে পৌঁছোন। এর পর দরজার তালা ভাঙা হয়। ঘরে তখন রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। পোকামাকড় ভর্তি মেজে। ঘরের সমস্ত জিনিসপত্রও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এরপর মহালক্ষ্মীর মা যখন ফ্রিজ খুললেন, তখন তার মেয়ের কাটা মাথা, পা সহ ৫৯টিরও বেশি টুকরো চোখে পড়ে তাঁর।
ঘটনাটা পুলিশের কানে যায়। তদন্ত করে পুলিশ পরিবারকে বলেছিল যে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, খুনের রাতে স্কুটিতে করে দু’জন লোক মহালক্ষ্মীর বাড়িতে এসেছিলেন। এ ঘটনায় আশরাফ নামে এক হেয়ার ড্রেসারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই আসামিদের ধরতে টিম গঠন করা হয়েছে।