আরজি কর মামলার (RG Kar Case) শুনানিতে সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteers) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কড়া প্রশ্নের মুখে পড়লো রাজ্য সরকার। এমনকি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে তাঁদের থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করা যায়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এই দিনের শুনানিতে রাজ্যের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যকে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে সিবিআই এর প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে তা খুবই উদ্বেগের এবং তা পড়ে তাঁরা বিচলিত বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর এজলাসে শুনানি ছিল আরজি কর মামলার। এইদিন মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। অভিযুক্ত পুলিশের এক জন এবং তিনি এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার তা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য করেন, “নিরাপত্তার অভাব ছিল বলেই তো ঐ সিভিক ভলান্টিয়ার সারা হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন।” যে জায়গায় সব সময় ডাক্তাররা কাজ করছেন সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মীদের কেন নিয়োগ করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। তারপরেই সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতি বলেন, “চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে তাঁদের থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করেন? কী ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারে রাজ্য?” রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে ১৮-২৩ বছরের তরুণীরা কাজ করেন। কিন্তু নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হলে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্য সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তাও জানতে চায় শীর্ষ আদালত।
আরজি কর-কাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেয় সিবিআই। যা পর্যবেক্ষণ করে শীর্ষ আদালত জানায়, আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। এই রিপোর্ট খুবই উদ্বেগের এবং তা পড়ে তাঁরা বিচলিত বলেও জানান প্রধান বিচারপতি। অন্যদিকে আরজি কর-কাণ্ডের পর ১৯ আগস্ট মহিলাদের নাইট ডিউটির ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল মহিলা কর্মীদের যতদূর সম্ভব কম নাইট ডিউটি দেওয়া হবে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। এইরূপ বিজ্ঞপ্তি ঠিক নয় বলে জানিয়ে অবিলম্বে তা সংশোধন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তা রাজ্যকেই সুনিশ্চিত করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ভারতীয় রেলে 8 হাজারেরও বেশি শূন্যপদে চলছে কর্মী নিয়োগ, গ্রাজুয়েশন পাশ হলেই আবেদন করতে পারবেন
অন্যদিকে আরজি কর কাণ্ডের পর বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতিতা চিকিৎসকের ছবি ও প্রকৃত নাম ব্যবহৃত হয়েছে। বিগত শুনানিতেই তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, উইকিপিডিয়াকে নির্যাতিতার নাম ও ছবি মুছে ফেলতে হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম রিপোর্ট পেশ করে আদালতে জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের জন্য শৌচাগার, বিশ্রাম কক্ষ, সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে৷ সেই সঙ্গে ডিউটি রুমেও তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।