চিফ রিপোর্টার- অর্পণ ভট্টাচার্য্য
ঘাটাল সহ পশ্চিম মেদিনীপুর (Midnapore) জেলার বহু এলাকা প্লাবিত গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে। জলের নীচে কয়েকশো বিঘা চাষের জমি। আকমুড়া, হাজীচক, কলাগ্রাম প্রভৃতি এলাকা জলের তলায়। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে প্রশাসন। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার প্রমুখ শীর্ষ স্থানীয় জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সোমবার কেশপুরের বন্যাকবলিত হাজীচক, কলাগ্রাম এলাকা পরিদর্শন করেন ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী তথা দেব। বন্যা কবলিত সাধারণ মানুষকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে ঘাটাল মহকুমা এলাকা কার্যত জলের তলায়। ঘাটাল পৌরসভার ৫ নং, ৬ নং, ৭ নং, ৮ নং, ৯ নং ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন। যাতায়াতের জন্য চলছে ডিঙ্গি ও নৌকা। জলের তলায় ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়কের একাধিক অংশ। শিলাবতী, কেঠিয়া, ঝুমি নদীর জলে প্লাবিত ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। যদিও সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে পশ্চিম মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গে। গত ২৪ ঘন্টায় ঘাটাল সংলগ্ন এলাকা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে ১২.৮০ মিলিমিটার। কিন্তু বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পশ্চিম মেদিনীপুরের নদীগুলি এখনও ফুঁসলে। জলস্তর বিপদসীমার উপরে৷
মঙ্গলবার সকালে শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শিলাবতী নদীর জলস্তর সকাল ৮ টায় বাঁকা পয়েন্টে ১৫.৯২ মিটার, গাদঘাটে ৯.৭৮ মিটার। রূপনারায়ণের জলস্তর বন্দরে ৮.৮২ মিটার, রাণীচকে ৬.২৮ মিটার এবং গোপীগঞ্জে ৪.২৯ মিটার। কলমীজোড়ে কাঁসাই নদীর জলস্তর ১০.৭৫ মিটার। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে এই মুহূর্তে নতুন করে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুনঃ ভারতে ঢুকে ভারতের বিরুদ্ধে কথা! ভিসা বাতিল করে পর্যটককে বাংলাদেশ পাঠাল বিদেশ মন্ত্রক
সোমবার দুপুরে ঘাটালের বন্যাকবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন ও সেচ দপ্তরের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী, ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস প্রমুখরা।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা ও পদক্ষেপ স্থির হয় বৈঠকে। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন নদীবাঁধগুলি খতিয়ে দেখে মেরামতের ব্যবস্থা করছে সেচ দফতর। মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও পানীয় জলের পাউচ। প্রস্তুত রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার উন্নতি হলেও বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সহ বিভিন্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।