Purba Midnapore: বাবা গিয়েছিলেন চিকিৎসা করাতে। স্কুলে পড়াতে এলেন মেয়ে। বাবা প্রধান শিক্ষক। স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় গাফিলতি হবে। তাই এমন পদক্ষেপ করেন মেয়ে। পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapore) বিলা আমরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা এটি। পর্যটন স্পট দীঘার কাছে অবস্থিত এই স্কুল। স্কুলে 35 জন পড়ুয়া রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক, চন্দন জানা, এবং সহ-শিক্ষক, রণিতা সেনাপতি, সাধারণত স্কুলটি পরিচালনা করেন।।চন্দন স্থানীয় এবং রনিতা নিকটবর্তী গোবরা এলাকার।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন জানা(Head teacher Chandan Jana) চিকিৎসার জন্য অন্য রাজ্যে গিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আসেননি। তাই তাঁর মেয়ে ঈপ্সিতা জানা(Ipsitta Jana) পড়াতে আসেন স্কুলে৷ ইপসিতা, ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাই তিনি ভেবেছিলেন যে এতে ছাত্রদেরই সুবিধা হবে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের এই সিদ্ধান্ত মনঃপুত হয়নি। বিক্ষোভ দেখা দেয়। সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। স্থানীয়দের প্রতিবাদ সত্ত্বেও, অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঈপ্সিতার প্রশংসা করেছেন, স্কুলের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করার জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই শিক্ষকতাকে একটি মহৎ কাজ বলে অভিহিত করেছেন এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য শিক্ষার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। তবে বাবার পরিবর্তে ইপ্সিতা কেন পড়াচ্ছিলেন তা নিয়ে তো উদ্বেগ রয়েছেই।
প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে, সহ-শিক্ষিকা রনিতার একার হাতে ছিল ক্লাস করার দায়িত্ব। তাই তাঁকে সাহায্য করার জন্য, প্রধান শিক্ষকের মেয়ে ইপসিতা জানা স্কুলে দুই দিন পড়াতে আসেন। শুক্রবার স্থানীয় কিছু বাসিন্দা স্কুলে গিয়ে, ঈপ্সিতার শিক্ষাদানে আপত্তি জানায়। তাঁরা যুক্তি দেন যে ঈপ্সিতা সরকারী অনুমতি ছাড়া পড়াতে পারেন না। যদিও ঈপ্সিতার দাবি, তিনি নিজের চারটি ক্লাস নিয়েছেন, কারণ সহ-শিক্ষিকা রনিতার পক্ষে একা সবটা করা চ্যালেঞ্জিং ছিল।
সহকারী শিক্ষিকা রনিতার, “প্রধান শিক্ষক চিকিৎসার জন্য দূরে আছেন, এবং ঈপ্সিতা তাঁর নির্দেশনায় স্কুলে পড়াচ্ছেন।” প্রধান শিক্ষক চন্দন জানা জানিয়েছেন, “আমি নিশ্চিত করছি যে আমি ছুটিতে থাকলেও স্কুল সুষ্ঠুভাবে চলছে। কিছু সমালোচক স্কুলকে অসম্মান করার চেষ্টা করছে। ঈপ্সিতা ছাত্রদের সুবিধার জন্য সহ-শিক্ষককে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “যখন স্কুলের অনুষ্ঠান হয়, গ্রামবাসীরা বিশেষ অনুমতি ছাড়াই অংশগ্রহণ করেন। আমি দু’দিনের জন্য ভুবনেশ্বরে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য, এবং যদি আমার অনুপস্থিতি আরও দীর্ঘ হত, আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিতাম।”
আরও পড়ুনঃ বন্যার সতর্কতা পশ্চিম মেদিনীপুরে, ঘাটালে জল বাড়ছে
এদিকে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শিক্ষকের প্রয়োজন হলে, গ্রাম শিক্ষা কমিটি বা স্কুল পরিদর্শককের থেকে আগে তার অনুমোদন নিতে হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, কী ঘটেছে তা বোঝার জন্য আমি পরিস্থিতি তদন্ত করছি।