মেদিনীপুর (Midnapore) মেডিক্যাল কলেজে অবশেষে আন্দোলনের জয়! বিতর্কিত প্রাক্তনী মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিককে বহিষ্কার করলো মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ (Midnapore Medical College) কর্তৃপক্ষ। তাঁকে হাউসস্টাফ শিপ থেকেও অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। ২ রা সেপ্টেম্বর থেকে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস বা হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না তিনি।মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকারে বাধ্য হল কর্তৃপক্ষ।
প্রভাবশালী ছাত্রনেতা মুস্তাফিজুর রহমান নিয়ে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। পাস করে যাওয়ার পরেও রুম দখল, দাদাগিরি, মহিলাদের অসম্মান সহ ভুরি ভুরি অভিযোগ ওঠে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) ইউনিট হেড মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বছর কয়েক আগে পাস করে গেলেও হোস্টেলের রুম দখল করে রেখেছেন ঐ ছাত্রনেতা। মহিলা চিকিৎসকদের সম্মান তো দূরঅস্ত, অডিটোরিয়ামের ডায়াসে উঠে ‘আইটেম সং’-এ নাচতে বলা হয়। বিভিন্ন ভাবে দাদাগিরি চালানো হয় মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, একাধিক বার কলেজ কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনে নামেন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষা ডাঃ মৌসুমী নন্দীকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়। পড়ুয়াদের চাপে সাময়িক ভাবে মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিককে কলেজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তা প্রত্যাহার হয়ে যায় ২২ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই। যা নিয়ে ফের আন্দোলনে নামেন পড়ুয়া চিকিৎসকেরা।
শনিবার দুপুর ২টো থেকে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল হাসপাতালের ডিন এবং সুপারকে। সোমবার দুপুরে অবশেষে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা ডঃ মৌসুমী নন্দী জানান, অভিযুক্ত হাউসস্টাফ মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক ২ সেপ্টেম্বর থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না। তাঁকে হাউসস্টাফ শিপ থেকেও অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সোমবারই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। ছাত্রনেতা মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক এই সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন চিকিৎসক মহলে। এই দুই ঘটনাকেই নৈতিক জয় হিসাবে দেখছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। যদিও তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।