চিফ রিপোর্টার- অর্পণ ভট্টাচার্য
মেদিনীপুর (Midnapore) মেডিক্যাল কলেজের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার! প্রভাবশালী ছাত্রনেতা মুস্তাফিজুর রহমান নিয়ে ক্ষোভে উত্তাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (Midnapore Medical College)। প্রভাব খাটিয়ে ভয়ের রাজনীতি কায়েমের বিরুদ্ধে সরব মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ও পড়ুয়া চিকিৎসকেরা। কনভোকেটেড হওয়ার পরেও মেডিক্যাল কলেজে থেকে যাওয়া ও ফেল করার পরেও সরাসরি রাজ্য মেডিক্যাল বোর্ডের এথিক্স কমিটির সদস্য হওয়ার অভিযোগ মুস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুনঃ মেদিনীপুর মেডিক্যাল উত্তাল! দাদাগিরি, মেয়েদের অসম্মানের অভিযোগ তৃণমূলের ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে
পাস করে যাওয়ার পরেও রুম দখল, দাদাগিরি, মহিলাদের অসম্মান সহ ভুরি ভুরি অভিযোগ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) ইউনিট হেড মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বছর কয়েক আগে পাস করে গেলেও হোস্টেলের রুম দখল করে রেখেছেন ঐ ছাত্রনেতা। মহিলা চিকিৎসকদের সম্মান তো দূরঅস্ত, অডিটোরিয়ামের ডায়াসে উঠে ‘আইটেম সং’-এ নাচতে বলা হয়। বিভিন্ন ভাবে দাদাগিরি চালানো হয় মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, একাধিক বার কলেজ কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনে নামেন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষা ডাঃ মৌসুমী নন্দীকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়। পড়ুয়াদের চাপে সাময়িক ভাবে মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিককে কলেজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তা প্রত্যাহার হয়ে যায় ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই। যা নিয়ে ফের আন্দোলনে পড়ুয়া চিকিৎসকেরা।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের পড়ুয়া ও জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, পাস করে যাওয়ার পরেও কলেজে থেকে গেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা মুস্তাফিজুর। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের অভিযোগ, ফেল করানো, অনার্স না দেওয়া, হাউসস্টাফশিপ করতে না দেওয়ার বা হোস্টেলে থাকতে না দেওয়ার ভয় দেখান তিনি। সেই ভয়ে এখনও অনেক পড়ুয়া চিকিৎসক মুখ খুলছেন না বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। এমনকি ভয় দেখিয়ে পড়ুয়া চিকিৎসকদের একাংশের মাধ্যমে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আন্দোলনকারীদের আরও অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ মুস্তাফিজুর। এই মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এথিক্স কমিটির সদস্য। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মুস্তাফিজুর পরীক্ষায় মেডিসিন ও পিডিয়াট্রিক্স বিভাগে অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরেও এথিক্স কমিটির মেম্বার হয়েছেন রাজনৈতিক প্রভাবের জোরে। সেই প্রভাব কাজে লাগিয়েই নিয়মিত পড়ুয়া চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অবিলম্বে ভয়ের পরিবেশ বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের আরও দাবি, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট বন্ধ করতে হবে এবং নির্বাচিত স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ও রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে৷