PM Narendra Modi: বাংলায় গত কয়েক বছরের মধ্যে একটার পর একটা দুর্নীতির তালিকায় নতুন নতুন দুর্নীতি জায়গা পেয়েছে। সেখানে যেমন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি রয়েছে, রয়েছে রেশন দুর্নীতি, মিউনিসিপ্যালিটিতে নিয়োগ দুর্নীতি, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। আর সেই সব দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে।
তারপর থেকেই একে একে গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে শেখ শাহজাহান, কুন্তল, সম্প্রতি বিদেশ, রাকিবুর রহমান, শংকর আঢ্যর মত তৃণমূলের একাধিক নেতা, বিধায়করা। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। দুর্নীতির তদন্ত চলছে। এবার বাংলায় এই দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে বাংলার মানুষের চোখের সামনে উঠে এসেছে মন্ত্রী নেতা বিধায়কদের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের চিত্র।
মন্ত্রী বা নেতার বান্ধবীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা অলঙ্কার উদ্ধার হতে দেখা গিয়েছে। সামনে উঠে এসেছে একের পর এক বিলাসবহুল বাংলো, হোটেল থেকে শুরু করে বহু পরিমান জমি। ফলে দুর্নীতির শিকড় কতটা গভীরে পৌঁছেছিল তা সহজেই বোঝা যায়।
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(PM Narendra Modi) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘বাংলায় আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্তে এখনো পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই টাকা কিভাবে বাংলার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তার আইনি উপায় খুঁজছি আমরা’। মোদি তখন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ক্ষমতায় ফিরলে আইনি উপায়ে বাংলার মানুষকে ৩ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’
এবার ইডি সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে সেই দুর্নীতির টাকা ফেরানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রোজভ্যালি মামলায় বাজেয়াপ্ত করা ১৯.৫ কোটি টাকা ইডি ফিরিয়ে দিয়েছে। আমানতকারীদের এই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করে প্রথম ধাপ হিসেবে সেই কমিটির হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির মাথায় একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইডি অফিসাররা ৫ নম্বর ম্যাঙ্গো লেনে গিয়ে আদালত নির্ধারিত এডিসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, ধাপে ধাপে বাজেয়াপ্ত করা আরো বহু পরিমান টাকা ফেরত দেওয়া হবে। যে সমস্ত আমানতকারীরা দুর্নীতির শিকার হয়ে টাকা দিয়েছেন, তারা বৈধ কাগজ দেখাতে পারলে তবেই তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যান্য মামলাতেও আগামী দিনে বাজেয়াপ্ত করা টাকা ইডি ফেরত দেবে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। ফলে মোদি নির্বাচনের আগে বাংলায় যে ঘোষণা করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষার ক্ষেত্রে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।