আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি ভবনের চতুর্থ তলার সেমিনার হল থেকে অর্ধ-নগ্ন অবস্থায় এক জুনিয়র মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যাওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই অমানবিকতায় অভিযুক্ত সঞ্জয়ের গ্রেফতারি অনেকের চোখেই ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা’। এমন পরিস্থিতিতে সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই সরব সোশ্যাল মিডিয়ায়। চলছে প্রতিবাদ। আন্দোলনে করতে রাস্তায় ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। জরুরি বিভাগ ছাড়া সব বিভাগে ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। এখম ‘অভয়া’র বিচার চেয়ে চিঠি গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।
আরও পড়ুনঃ আর কিছুদিন অপেক্ষা, ট্রেনে চড়ে চোখের নিমেষে পৌঁছে যাবেন সিকিম
সৃজিত স্বস্তিকাদের পর চুপ করে থাকলেন না কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। কলম ধরে লিখলেন, ‘যোনি মানে তো চিরে রাখা রাস্তাই একটা, একটা সরু গলিপথ। কিন্তু সেটুকুতে মন উঠল না তোমার। তুমি সেই রাস্তায় কাটারি চালিয়ে আরও বড় রাস্তা বানালে। চেরাকে সোজা ফালা করে দিলে। আরও বড় জায়গা তৈরি হল। তুমি রক্ত মাংস কাদার মধ্যে দিয়ে হাত চালিয়ে ভেতর থেকে বার করে আনলে নাড়িভুড়ি। বাইরে পাহাড় তৈরি হল ছোটখাটো। আর ভেতরে জায়গা। অনেকখানি। এইবার তুমি যোনির মধ্যে রড ঢোকালে। তারপর স্টোন চিপস। তারপর ট্রাক। তারপর হোটেল। তারপর পেট্রল পাম্প। তারপর শপিং মল। তারপর জাহাজ বোঝাই বন্দর। তারপর বিমানপোত। তারপর মহাসমুদ্র। তারপর হাতের মুঠোয় চেপে ধরে ঠেসেঠুসে গোটা পৃথিবীটা তুমি গুঁজে দিলে সেখানে। কিন্তু, কী আশ্চর্য, তোমার কৌতূহলী মন তাতেও শান্ত হল না। শেষমেশ ব্যাপারটা কী, বুঝে নিতে তুমি নিজেই ঢুকলে ভেতরে। মাথা, বুক, কোমর, হাঁটু, পা। এইভাবে পুরোটা ঢুকে গেলে। ন’মাস পর তদন্ত সেরে যখন বেরিয়ে এলে, ডাক্তারের হাত, টেনে বার করল তোমাকে।’
তাঁর এই লেখা পড়ে শত ব্যথার মাঝেই প্রশংসায় ভরিয়েছে নেটিজেনরা। ‘তাঁদের কবি মরে না কখনও, তার শুধু অভিযোজন দরকার হয় নিজেকে বাঁচানোর! এই লেখা একশো বছর পরেও গর্জে উঠবে। শ্রীজাতদা, এমন লেখা পড়লে চোখের জল আপনা হতেই ঝরতে থাকে… অদ্ভুত এক তালগোল পাকানো যন্ত্রণা ভেতরটা তোলপাড় করে দেয়… কী জানি কেনো অনেকবার পড়লাম লেখাটা… এ লেখা তো আসলে শাস্তি, তোমার, আমার, আমাদের সকলের… তবুও প্রতিবাদের কলম এভাবেই জ্বলে উঠুক।’
ফেসবুক পোষ্ট টি সরাসরি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে মহিলা চিকিৎকের উপর এমন নৃশংসতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। নির্যাতিতা তরুণীর বাবা-মা’র সঙ্গেও কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।