মেদিনীপুরে (Midnapore) সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরর কারখানার ভবিষ্যৎ অন্ধকার! পশ্চিম মেদিনীপুরের (Midnapore) চন্দ্রকোনা রোডে ফিল্ম সিটির জমি হস্তান্তরের উপর আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করলো কলকাতা হাইকোর্ট। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঐ জমির কোনও রকম ব্যবহার বা বিক্রি কিছু করতে পারবে না রাজ্য সরকার।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘ফিল্মসিটি’ তৈরির জন্য প্রয়াগ গোষ্ঠীকে ৭৫০ একর জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানেই ইস্পাত কারখানা তৈরির জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে এক টাকার বিনিময়ে ৩৫০ একর জমি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়ে জনস্বার্থ মামলা। শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি ছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ, এই মামলার রায়ের উপরে জমির মালিকানার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। ৩৫০ একরের মধ্যে ১১.২৮ একর জমি তালুকদার কমিটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই অবস্থায় ওই জমির কোনও রকম ব্যবহার বা বিক্রি করতে পারবে না রাজ্য। সেই সঙ্গে কেন ঐ জমির নিলাম বা কোনো ওপেন টেন্ডার না করে একজনকে বিক্রি করা হল, আদালত তার ব্যাখ্যা চেয়েছে রাজ্যের কাছে। আদালতের আরও নির্দেশ, রাজ্য, সেবি ও তালুকদার কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে চন্দ্রকোনার ঐ জমির অবস্থা ও বাজার মূল্য খতিয়ে দেখবে রাজ্য। জমি নিয়ে সমস্ত পক্ষকে আদালতের কাছে হলফনামা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘ফিল্মসিটি’ তৈরির জন্য প্রয়াগ গোষ্ঠীকে ৭৫০ একর জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। ঐ প্রকল্পে প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা ব্যয় করে সংস্থাটি। কিন্তু পরবর্তীতে চিটফান্ড কান্ডে জড়িয়ে যায় সংস্থটির নাম। সেই মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এসপি তালুকদারের নেতৃত্বে কমিটির সুপারিশে, আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে ‘ফিল্মসিটি’র জন্য নির্ধারিত ঐ ৭৫০ একর জমি সহ প্রয়াগ গোষ্ঠীর অন্যান্য সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাজ্য। কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় আমানতকারীরা এখনও টাকা ফেরত পাননি।
ইতিমধ্যে শালবনীর জমি নিয়ে জটিলতার কারণে ঐ জমিতেই ৩৫০ একর জমি ইস্পাত কারখানার জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু প্রয়াগ গোষ্ঠী মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি, আমানতকারীরাও টাকা ফেরত পাননি। তার আগেই বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তি কেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেওয়া হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এসকে মাসুদ নামে এক আমানতকারী। শুনানির পর প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ মামলাটি চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার বিশেষ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছিল। এখন জমি জটে ফের অনিশ্চিত সৌরভের ইস্পাত কারখানার প্রকল্প।