পুরাতন চিত্রের প্রত্যাবর্তন! ভাসছে ঘাটাল (Ghatal Flood)! বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাটাল মহকুমার (Ghatal Flood) বিস্তীর্ণ এলাকায়। জলের তলায় চাষের জমি,রাস্তাঘাট। অনেক এলাকাতেই মানুষের যাতায়াতের মূল ভরসা নৌকা। ডিভিসি জল ছাড়ার পরে জল ঢুকতে শুরু করেছে শহর ঘাটালের বিভিন্ন এলাকাতেও। এরই মধ্যে ঘাটালবাসীর অসহায় প্রশ্ন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কবে বাস্তবায়িত হবে?
দিন কয়েকের লাগাতার বৃষ্টির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার বেশ কিছু অংশ আগেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ঘাটাল মহকুমায় জল যন্ত্রণা বাড়িয়েছে ডিভিসির ছাড়া জল। গত কয়েক দিন ধরে প্রবল বর্ষণের ফলে ঝুমি, শিলাবতী, রূপনারায়ণ নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। একাধিক জায়গায় অস্থায়ী ব্রিজ ভেঙেছে। ঝুমি নদীর ওপরে যে সমস্ত ব্রিজ রয়েছে, তার মধ্যে ১২টি কাঠের ব্রিজ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। ঘাটাল মহকুমার মনসুকা ১,২ ও গড়প্রতাপপুর এলাকার প্রচুর মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। অনেক জায়গাতেই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এখন নৌকা ও ডিঙি। ডিভিসির ছাড়া জল পুরোপুরি এসে পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
রবিবার ঘাটাল মহকুমার জলমগ্ন এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক খুরশীদ আলী কাদরী, ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাস শাসমল বলেন, “জল এখন খুব বাড়ছে। চাষবাসের জমি জলে সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। ঘরের সামনে পুরো জল হয়ে গেছে। বাড়ি থেকে রাস্তা পর্যন্ত বেরানো যাচ্ছে না। এক কোমর জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। নৌকা ছাড়া কোনো উপায় যাতায়াত করার। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনো সাহায্য পাইনি।” একই বক্তব্য অপর এক স্থানীয় বাসিন্দা দীপঙ্কর ধারারও। তিনি বলেন, “এখন পরিস্থিতি খুবই খারাপ। জল বাড়ছে। আস্তে আস্তে রাস্তাঘাট, ঘর জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছে। আজ সকালেও এতটা জল ছিল না। কিন্তু এখন জল বাড়ছে। পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে।”
ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানিয়েছেন, “এখন ঘাটালের পরিস্থিতি এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। কিছু কিছু জায়গায় জল কমছে। আজ জল কমেছে। আমরা সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। আমরা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সবটা লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের ইরিগেশন ডিপার্টমেন্টও সম্পূর্ণ প্রস্তুত।” প্রশাসনিক ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হলেই প্রতি বছরের বর্ষায় জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই ঘাটালবাসীর৷ জলবন্দি জীবনে জোরালো হচ্ছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের দাবি।