রাজীব ঘোষ: রেললাইন ধরে ছুটছেন এক বৃদ্ধা। ওই লাইনেই তীব্র গতিতে ছুটি আসছে একটি ট্রেন। আর বৃদ্ধাও ওই ট্রেনের দিকে লক্ষ্য করেই ছুটছেন। ঠিক ওই মুহূর্তেই ঝাড়গ্রাম(Jhargram) পুলিশ লাইনের কর্মরত এক হোমগার্ড(Home Guard) ওই বৃদ্ধাকে ঝটতি লাইন থেকে সরিয়ে নিয়ে জাপটে ধরে রাখেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত ট্রেনটি চলে যায়। ঐ বৃদ্ধার তীব্র বাধা সত্বেও হোমগার্ড তাকে ছেড়ে দেননি। ফলে বেঁচে যান ওই বৃদ্ধা।
ঘটনাটি ঝাড়গ্রামের রেল স্টেশনের(Jhargram railway station) ঘটনা। শুক্রবার দুপুর ২টার সময় ঝাড়গ্রাম পুলিশ(Jhargram Police) লাইনের কর্মরত হোমগার্ড দুরা টুডু ডাকগুলি সংগ্রহ করে রেললাইনের অপরপ্রান্তে অপেক্ষারত আরেক হোমগার্ড হরিশচন্দ্র মাহাতোর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য স্টেশনে যাচ্ছিলেন। যখন তিনি হরিশ মাহাতোর হাতে ওই ডাকগুলি তুলে দেওয়ার কাজ করছিলেন, ঠিক সেই সময়ে একজন বৃদ্ধা তাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপ লাইনে কখন ট্রেন আসছে? দুরা টুডু কাজে ব্যস্ত থাকায় উত্তর দিতে একটু দেরি হয়। কিন্তু বারবার ওই বৃদ্ধার প্রশ্নের কারণে হোমগার্ড দুরা টুডুর সন্দেহ হয়। তারপর থেকেই তিনি নজর রাখেন ওই বৃদ্ধার উপর।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনে স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের
হোমগার্ড হরিশ মাহাতোর হাতে ডাখগুলি তুলে দেওয়ার পরে দুরা টুডু কিছুক্ষণ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকেন। তখনই লক্ষ্য করেন, উল্টো দিক থেকে একটি মালগাড়ি আসছে। আর ওই মালগাড়ি লক্ষ্য করে ওই বৃদ্ধা ছুটে যাচ্ছেন লাইনের উপর দিয়ে। দুরা টুডুর বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে ঝটতি ওই বৃদ্ধাকে লাইন থেকে সরিয়ে জাপটে ধরে রাখেন। তারপরে ঝাড়গ্রাম জিআরপির হাতে ওই বৃদ্ধাকে তুলে দিলে তার বাড়ির লোকজন এসে তাকে নিয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা মানসিক অবসাদগ্রস্ত। তিনি আত্মহত্যা করার জন্যই ওই লাইন ধরে ছুটছিলেন।
ঝাড়গ্রাম পুলিশ লাইনের কর্মরত হোমগার্ড দুরা টুডু এবং হরিশচন্দ্র মাহাতোর তৎপরতায় ওই বৃদ্ধার প্রাণ বেঁচে যায়। আর এর পরেই ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের তরফে পুলিশ লাইনে হোমগার্ড দুরা টুডু এবং হরিশচন্দ্র মাহাতোকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এই দুইজন হোমগার্ডের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একজন পুলিশ কর্মী হিসেবে নয়, সাধারণ নাগরিক হিসেবেও প্রশংসনীয়। তাই দুইজন হোমগার্ডকে সংবর্ধনার প্রমাণ হিসেবে শংসাপত্র এবং পুরস্কার তুলে দেন ঝাড়্গ্রাম পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার আইপিএস অরিজিৎ সিনহা। হোমগার্ড দুরা টুডু এবং হরিশ মাহাতোর প্রশংসা করেন তিনি।